ব্যুরো রিপোর্ট: টোকিওতে ব্ল্যাকআউট হতে পারে। ১৪৭ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ তাপপ্রবাহের সামনে পড়েনি জাপান। তাপমাত্রার পুরনো রেকর্ড সব ভেঙে গিয়েছে এবার। তারপর বৃহস্পতিবার উত্তর-পূর্ব জাপানের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
এমন তাপমাত্রার পারদ জাপানের রাজধানীতে বিগত ১৪৭ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি।তাপমাত্রা বেড়েছে সাংঘাতিকভাবে। তারপর ফুকুশিমা প্রিফেকচারের নাকোসো কয়লা এবং তেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিকল হয়ে যায়। একটি ভেন্টিলেটরে সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্ল্যান্টের ৯ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
ফলে গভীর সংকটে পড়ে জাপানের রাজধানী শহর টোকিও। এই পরিস্থিতিতে টোকিও-য় ব্ল্যাক আউটের পরিস্থিতি তৈরি হয়।প্ল্যান্ট অপারেটর জানান, প্ল্যান্টটিকে যত শীঘ্র সম্ভব অনলাইনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে টোকিও-সহ পূর্ব জাপানের একটি বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু করে। আপাতত ব্ল্যাক আউটের হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে যে কোনও মুহূর্তে আবারও বিকল হতে পারে কোবও ইউনিট। ফলে ফের ব্ল্যাক আউটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
শিল্পমন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, টোকিওতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে তাপমাত্রা বিপুল পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায়। জাপানে এই জুন-জুলাইয়ে ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চড়েছে তাপামাত্রা। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ইউনিটে চাপ পড়ছে। ব্ল্যাকআউটের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এই পরিমাণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি এই প্রথম।
১৮৭৫ সালের জুনমাস থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হয়েছিল জাপানের তাপমাত্রা। সেই নিরিখে এবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৪৭ বছরেসরকার টানা চতুর্থ দিনের জন্য টোকিও এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে সম্ভাব্য বিদ্যুৎ সংকটের কারণে একটি পরামর্শমূলক সতর্কতা জারি করেছে।
যদি ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা বিদ্যুৎ-শক্তি সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলি অনুসরণ না করেন, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষত, মন্ত্রক সতর্ক করেছে যে তাপমাত্রার ব্যাপকবৃদ্ধিতে এয়ার-কন্ডিশনারগুলির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার বিদ্যুৎ ঘাটতি হতে পারে।
যেহেতু দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলগুলি একটি জ্বলন্ত তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হচ্ছে, জাপান আবহাওয়া সংস্থা হিটস্ট্রোক সতর্কতা জারি করেছে। পূর্ব এবং পশ্চিম জাপান উভয়ের বাইরে লোকেদের হাইড্রেটেড থাকার পরামর্শ দিয়েছে। জেএমএ বলেছে, সাইতামা এবং গুনমা প্রিফেকচার-সহ টোকিওর উত্তরের অঞ্চলে পারদ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের শীর্ষে রয়েছে।
ফায়ার অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দেশব্যাপী ৪৫৫১ জন লোক হিটস্ট্রোক বা গরমে কাহিল হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তা এক বছর আগের একই সময়ে তাপজনিত অসুস্থতার সংখ্যার চারগুণ।