ব্যুরো রিপোর্ট: কার্যত অরাজকতার শেষ নাম আপাতত তালিবানি শাসনের আফগানিস্তান। সেদেশে প্রবলহারে আফগানি অপশাসন চরম আকার নিয়েছে। গত রবিবার কাবুল পতনের পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। আর তার হাত ধরে প্রবল হারে দমন পীড়ন শুরু হয়েছে সেদেশে।
এই অবস্থায় ভারতীয় দূতাবাসেও তাণ্ডব চালাতে ছাড়েনি তালিবান। এদিকে, ভারত সাফ জানিয়েছে, সেদেশ থেকে যে ভারতীয়রা দেশে ফিরতে আগ্রহী, তাঁদের নিয়ে আসাই আপাতত দিল্লির ফোকাস। সেই মতো ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান ইতিমধ্যেই দেশে ৮৭ জনকে নিয়ে এসেছে। এদিন আরও ৩০০ জনের দেশে ফেরার অপেক্ষা।
এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রের খবর যে কাবুল থেকে একটি ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান সকাল সাতটারকিছু আগে এদিন রওনা হয়ে গিয়েছে ভারতের উদ্দেশে। ভারতীয় বায়ুসেনার সি ১৭ বিমান সেখানে তালিবানি শাসনের মাঝে আটকে পড়া ১৬৮ জন ভারতীয়কে নিয়ে গাজিয়াবাদের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
গতরাতেই জানা যায় যে, কাবল থেকে দিল্লি পৌঁছেছেন ৮৭ জন ভারতীয়। এই ভারতীয়রা বিমানে উঠতেই ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনিতে সোচ্চার হন বিমানের ভিতর। এরপর আজ ৩০০ জনের দেশের ফেরার অপেক্ষা। এদিকে, আপাতত অরাজকতা কাটিয়ে কাবুল বিমানবন্দর রয়েছে মার্কিন নিরাপত্তায়।
ফলে সেই নিরাপত্তার ঢাল ব্যবহার করে ঘরের মানুষকে দেশে ফেরাতে চরম তৎপরতা নিয়েছে দিল্লি। জানা গিয়েছে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে থাকা কাবুল বিমামন বন্দর থেকে প্রতিদিন দুটি করে বিমান চলাচল করবে দেশে। আর তাতেই ফিরিয়ে আনা হবে ভারতীয়দের।
শনিবার এক খবরে জানা গিয়েছিল যে বহু ভারতীয় যাঁরা দেশে ফিরতে আগ্রহী ছিলেন তাঁরা তালিবানের কবজায় চলে গিয়েছেন। তবে দিল্লির তরফে জানা গিয়েছে যে সেই ভারতীয় নাগরিকরা সকলেই ভালো আছেন।
১৫০ জন এমন ভারতীয়ের সন্ধান মেলে যাঁরা তালিবানের কবজায় চলে যান বলে খবর ছিল। শোনা যায় যে সেখানের বেশিরভাগ আটকে পড়া মানুষই ছিলেন শিখ ধর্মাবলম্বী। এরপর জানা যায় ভারতীয়দের অপহরণের বেশ কয়েক ঘণ্টা পর সেই ভারতীয়দের মুক্তি দেয় তালিবান।
এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের মাটি ছাড়তে আগ্রহী একাধিক ভারতীয়। এদিকে তালিবান সূত্রে দাবি করা হয়, কোনও ভারতীয়কেই তারা অপহরণ করেনি। এদিকে গত শুক্রবার আফগানিস্তানে ভারতের দূতাবাসে প্রবেশ করে সেখানে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে তালিবানিরা।
চুরি করেছে গাড়ি। খোয়া গিয়এছে বহু নথি। এই পরিস্থিতিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় সেদেশ থেকে ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে ভারত।
এদিকে, আফগানিস্তানে যে শুধুই তালিবানি তাণ্ডব চলছে তা নয়। দিনে দিনে ফুরোচ্ছে সেদেশের খাদ্যভান্ডার। চাষাবাদ কার্যত স্তব্ধ বললেই চলে।ফুরিয়ে যাচ্ছে গমের ভাঁড়ার। সেদেশে এবছর গমের উৎসপাদনে কমতি প্রথমেই ছিল।
তার ওপর বর্তমানে তালিবানি শাসনের মাঝে গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে বহু দোকান। শোনা যাচ্ছে মজুত করা খাবার গুদাম থেকে সরাসরি বাজারে আসত না পারায় বহু খাবার নষ্ট হচ্ছে। ফলে বাড়ছে দাম। সাধারণ মানুষের সামনে কার্যত সেখানে উভয় সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে।