ব্যুরো রিপোর্ট: করোনার জেরে গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজারের ঘরেই রয়েছে। এদিন এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। গতকালের যে রিপোর্ট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজারের ঘরে ছিল।
তার থেকে এদিন খানিকটা নেমেছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে উদ্বেগ এখনও অব্যাহত। কারণে সামনেই উৎসবের মরশুম, তার মাঝেই রয়েছে করোনার জেরে তৃতীয় ওয়েভ আসার সম্ভাবনা।
গবেষকদের তেমনই দাবি। এদিকে, গোটা দেশকে করোনার দ্বিতীয় স্রোতের ভয়াবহ স্মৃতি তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সেই জায়গা থেকে দুর্গাপুজোর আগে এই করোনা রিপোর্ট ঘিরে তাৎপর্য বাড়ছে।
অ্যাক্টিভ কেস বাড়ছে প্রতিদিন। এই পরিস্থিতিতে এদিনের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, অ্যাক্টিভ কেসের এমন উত্থান পতনের পর তৃতীয় স্রোতের আশঙ্কা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে দেশ।
এই পরিস্থিতিতে এদিনের রিপোর্টে করোনার সার্বিক পরিসংখ্যান বলছে , দেশে মোট সুস্থতার সংখ্যা ৩,২০,৬৩,৬১৬ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্য়ার চেয়ে সুস্থতার সংখ্যা অনেকটাই কম। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪৫,৩৫২ জন।
আর একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৩৪,৭৯১ জন। সুস্থতার হার ৯৭.৪৫ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৩,৯৯,৭৭৮ জন। মৃতের সংখ্যা মোট ৪,৩৯,৮৯৫ জন। মোট ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, ৬৭,০৯,৫৯,৯৬৮ জন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বৃহস্পতিবারের যে বুলেটিন দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টাতে রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯৫ জন। যা গত ৪৮ ঘন্টার হিসাবের থেকে কিছু বেশি। বুধবার রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭৯।
আজ বৃহস্পতিবার সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশ উপরের দিকে। পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমণ নিয়ে পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫,৪৯,৯৭৮ জন। আক্রান্তের নিরিখে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা।
গত ২৪ ঘন্টাতে এই জেলাতে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১২২ জন। যদিও গত কয়েকদিন ধরে এই জেলাতে প্রত্যেকদিন গড়ে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।
ফলে দুর্গাপুজোর আগে এই পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগ বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে। এদিকে, সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা। একদিনে আক্রান্ত সেখানকার ১০২ জন। দৈনিক সংক্রমণের ফের তৃতীয় স্থানে হাওড়া।
এদিকে, গতকাল যে রিপোর্ট দেওয়া হয়, তাতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টাতে করোনাতে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। বুধবারের তুলনায় সামান্য বেশি। মৃত্যর নিরিখে শীর্ষে নদিয়া। সেখানে গত ২৪ ঘন্টাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর তালিকাতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সেই উত্তর ২৪ পরগনা।
এদিকে, ভ্যাকসিন পেয়েছেন দেশের ৬৭,০৯, ৫৯,৯৬৮ জন। গোটা দেশে এই মুহূ্তে তুঙ্গে রয়েছে ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভ। তবে তারই মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে কেরল। কেরলে গত পরশুদিনের থেকে ৭০৬ জন কমে রয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
গত ২৪ ঘণ্টায় কেরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩২,০৯৭ জন । ফলে তার জেরেই গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক হারে বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে গোটা দেশে রোজই ৪০ হাজারের আশপাশে থেকে যাচ্ছে।
এদিকে আজকে গতকালের তুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় ৩.৬ শতাংশ কমতিতে রয়েছে। অন্যদিকে, কেরলে মোট আক্রান্তের সংখ্যার ৭৫ শতাংশ রয়েছে কেরলে। এমন পরিস্থিতিতে রীতিমতো উদ্বেগে দেশ। সদ্য কেরলে সমাপ্ত হয়েছে ওনম উৎসব।
তারপর থেকেই সেরাজ্যে প্রবল হারে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ । এদিকে , ওনমের পর কেরলের এই পরিস্থিতি নিয়ে যখন উদ্বেগ তুঙ্গে তখনই দেখা যাচ্ছে সরকারের তরফে সতর্কবাণী।
সেই সতর্কবার্তায় সাফ জানানো হয়েছে, যতক্ষণ না একজন ব্যক্তি দুটি পর পর ডোজ নিচ্ছেন করোনার,ততক্ষণ তাঁর কোনও জমায়েতে যাওয়া উচিত নয়।
এই বার্তা দিয়েছে খোদ কেন্দ্র। সেই জায়গা থেকে করোনা সংক্রমণ ও ভ্যাকসিনেশেনর ভারসাম্য আনতে কার্যত মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। এদিকে, সামনেই খুলছে বিভিন্ন রাজ্যের স্কুলগুলি। সেক্ষত্রে শিশুদের ভ্যাকসিনেশন সহ বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে অবস্থা কোনদিকে যেতে পারে, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।