শিশুদের করোনার টিকা দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ কিউবা নজির গড়ল, ভারত কবে নেবে উদ্যোগ?‌‌

শিশুদের করোনার টিকা দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ কিউবা নজির গড়ল, ভারত কবে নেবে উদ্যোগ?‌‌

ব্যুরো রিপোর্ট:  করোনা ভাইরাসের হাত থেকে ছোট ছোট শিশুদের কীভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে খুব বড় প্রশ্নের মুখে ছিল গোটা বিশ্ব। তবে ২ বছরের শিশুদের কোভি–১৯–এর বিরুদ্ধে টিকাকরণ করিয়ে নজির গড়ল কিউবা। বিশ্বের মধ্যে এই দেশই প্রথম যারা সোমবার এই অসাধ্য সাধন কাজটি করে দেখিয়েছে।

কিউবায় দুটি করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, যা দেশেই প্রস্তুত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যাকসিন দুটিকে স্বীকৃতি দেয়নি।১ কোটি ১২ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত এই কমিউনিস্ট দ্বিপ কিউবার লক্ষ্য হল স্কুল পুনরায় খোলার আগেই তার দেশের সব শিশুদের যেন টিকাকরণ সম্পন্ন হয়ে যায়,

কারণ ২০২০ সালের মার্চ মাসেই দেশের অধিকাংশ অংশের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল করোনা মহামারির জন্য। সোমবার থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে স্কুলগুলিতে, কিন্তু টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন বাড়ি থেকেই পড়াশোনা চলছে।

তবে দেখা গিয়েছে অধিকাংশ কিউবার বাসিন্দাদের বাড়িতে ইন্টারেনট নেই। যার ফলে পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। আবডালা ও সোবেরানা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর সম্পূর্ণ করার পর শুক্রবার থেকেই শিশুরদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়।

শুরুতে সেখানে ১২ বছর এবং তার বেশি বয়সের শিশুদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। তবে সোমবার থেকে কিউবার সিয়েনফুয়েগোস শহরে ২-১১ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া শুরু করে দেওয়া হয়।বিশ্বের অনেক দেশে ১২ বছর এবং তার ঊর্ধ্বদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।

ভারত সহ আরও কিছু দেশে এখনও বিচার বিবেচনা চলছে। চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ভেনিজুয়েলা ঘোষণা করেছে যে তারাও শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচি শীঘ্র শুরু করে দেবে। কিন্তু কিউবা এই দেশগুলির চেয়ে সবচেয়ে আগে এই কাজ করে দেখিয়েছে।

সোমবার চিলিতে চিনা ভ্যাকসিন সিনোভ্যাককে ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ওপর প্রয়োগ করার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, কিউবার এই দুই ভ্যাকসিন প্রথম তৈরি হয় ল্যাটিন আমেরিকায়, তবে এখনও আন্তর্জাতিক স্তরে বৈজ্ঞানিক কোনও পিয়ার-রিভিউ নেই এই ভ্যাকসিন দু’‌টির।

এই দুই ভ্যাকসিন রিকম্বিনেন্ট প্রোটিন প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে আমেরিকার নোভাভ্যাক্স ও ফ্রান্সের স্যানোফি ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও, এই দু’‌টি ভ্যাকসিনও হু-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

অন্যান্য ভ্যাকসিন শটের তুলনায় রিকম্বিনেন্ট ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ঠাণ্ডায় রাখার প্রয়োজন হয় না।জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে কিউবার অধিকাংশ স্কুলই বন্ধ হয়ে যায়। গত বছরের শেষের দিকে কিছু সপ্তাহের জন্য স্কুল খুললেও ফের তা জানুয়ারি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে অক্টোবর এবং নভেম্বরে স্কুলগুলি ধীরে ধীরে পুনরায় চালু হবে, কিন্তু সমস্ত শিশুদের টিকা দেওয়ার পরেই।রাষ্ট্রপুঞ্জের এজেন্সি ইউনিসেফ বিশ্বজুড়ে সব স্কুলগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় খোলার আর্জি জানিয়েছে,

কারণ স্কুলগুলি দীর্ঘসময় বন্ধ থাকলে তার খরচ অনেক বেশি এবং তা বহন করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে কিউবায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য পদ্ধতিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে গিয়েছিল।

করোনা প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে কিউবার মৃত্যু হয়েছে ৫,৭০০ জনের, যার মধ্যে অর্ধেকের মৃত্যু গতমাসে হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ করোনা কেস ধরা পড়েছে এই দেশে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *