ফেসবুক হল ‘মেটা’, নাম বদলে মেটাভার্সের স্বপ্নকে তাড়া জুকারবার্গের

ফেসবুক হল ‘মেটা’, নাম বদলে মেটাভার্সের স্বপ্নকে তাড়া জুকারবার্গের

ব্যুরো রিপোর্ট:  ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং কিছুটা এগিয়ে অগমেন্টেড রিয়েলিটি এই দুইকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যেতে এবং ভবিষ্যতকে নিজেদের মতো করে সাজাতে নাম বদলে ফেলল মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা ফেসবুক। এবার থেকে তার নাম হবে মেটা।

আর এই কাজটি করা হচ্ছে কারণ রিয়েল এবং ভার্চুয়াল জগতকে আগামিদিনে মিলিয়ে-মিশিয়ে একাকার করে দিতে চলেছেন জুকারবার্গ এবং তাঁরই মতো মেটাভার্সের স্বপ্নকে বুকে আঁকড়ে এগিয়ে চলা বেশ কিছু সংস্থা।

ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মকে ঘিরে সাম্প্রতিক অতীতে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি উঠেছে। ফেসবুকের নানা প্ল্যাটফর্মে হিংসা ও নেতিবাচকতা যেভাবে ডালপালা মেলেছে তা নিঃসন্দেহে এর কৌলিন্যে বারবার আঘাত করেছে।

সম্প্রতি ফেসবুকের প্রাক্তন কর্মী ফ্রান্সেস হগেন কিছু নথি ফাঁস করেন এবং অভিযোগ করেন যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার চেয়েও মুনাফাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। যদিও ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন যে মিথ্যাচার করতেই এই তথ্য সামনে আনা হয়েছে।

যদিও মাসিক ২৯০ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর কাছে এই বিষয়টি যে সাড়া ফেলে দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।মেটাভার্স বিষয়টির কথা কয়েকদশক আগে সামনে এসেছিল সাহিত্যের পাতায়।

যেখানে কল্পনার জগতের মতোই এক ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডের কথা বলা হয়েছিল যেটিকে আলাদা আলাদা জায়গায় থেকেও আলাদা ব্যক্তি একইসঙ্গে এবং একইসময়ে ব্যবহার করতে পারবে।মার্ক জুকারবার্গ বহুদিন ধরেই চেষ্টা করছেন যাতে ফেসবুকের মতো সংস্থাকে শুধু সোশ্যা মিডিয়া সংস্থা হিসাবে না রেখে একটি মেটাভার্স সংস্থায় বদলে ফেলা যায়।

আর সেকারণেই জুকারবার্গ এবং অন্যান্যরা অগমেন্টেড ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দুটিতেই বিনিয়োগ করেছেন সাম্প্রতিক অতীতে। এবং ভবিষ্যতে সেই বিনিয়োগ আরও বাড়াবেন সন্দেহ নেই।মেটাভার্স হল ইন্টারনেটের আধুনিক সংষ্করণ।

সেখানে ভার্চুয়াল স্পেসেই মানুষ সারা বিশ্বকে বা অন্য অনেকের সঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন সেই নির্দিষ্ট স্থান বা মুহূর্তে উপস্থিত না থেকেও।বিষয়টি আর একটু স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করতে গেলে বলা যেতে পারে, যেমন – ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তবের সঙ্গে সাযুজ্য রয়েছে এমন অ্যানিমেটেড অবস্থা আপনি উপভোগ করতে পারবেন।

গতি নিয়ন্ত্রণকারী সেন্সরের মাধ্যমে স্ক্রিনে দেখানো ছবির গতিকে আপনার ভার্চুয়াল রিয়েলিটির গতির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে। আপনার গতি আর স্ক্রিনের গতি তখন মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। ফলে আপনি ভার্চুয়াল স্পেসে তখন হারিয়ে যাবেন।

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরবর্তী ধাপ বা আর একটু স্পষ্ট অবস্থা হল অগমেন্টেড রিয়েলিটি। অর্থাৎ বলা যেতে পারে আপনার আশেপাশের বাস্তবতাকেই কল্পনার জগতে রূপান্তরিত করে দিতে পারে এই অগমেন্টেড রিয়েলিটি। এটি অনেক বেশি গোছানো, আপনি যা চাইছেন তাই করতে পারবেন।

অনেক বেশি এক পরিপাটি জগত।অগমেন্টেড রিয়েলিটির একেবারে হাতের কাছের উদাহরণ হল কয়েকবছর আগে সাড়া ফেলে দেওয়া পোকেমন গেমস। যা অগমেন্টেড রিয়েলিটির একেবারে প্রথম ধাপ বলা যেতে পারে।

অর্থাৎ হিমশৈলের চূড়ামাত্র। যেখানে আপনার চেনা জায়গায়ই ভার্চুয়াল স্পেসে পোকেমন ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আপনি গিয়ে সেটিকে পাকড়াও করে আনছেন। এমন বিষয়গুলিই আরও স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে আপনাকে আগামিদিনে অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে অভ্যস্ত করে তুলবে।

তবে তার জন্য মাত্র মাঝের কয়েক বছরের অপেক্ষা। তার মাঝে এই প্রযুক্তির আরও ঘষামাজা হবে সন্দেহ নেই। ভবিষ্যতকেই আগামী কয়েকবছরের মধ্যে পাল্টে দেবে এই অগমেন্টেড রিয়েলিটি বা এআর। ফলে তখন কোনটা রিয়েল জগত আর কোনটা ভার্চুয়াল জগত তা আঁচ করাই মুশকিল হয়ে উঠবে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *