ব্যুরো রিপোর্ট: দেশের শাসন হাত থেকে চলে গিয়েছে। তালিবান জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়েছে দেশের ক্ষমতা। মৃত্যু থেকে বাঁচতে আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য দেশের মাটিতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এই অবস্থায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে আশ্রয় নেওয়া আফগানিস্তানের সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আশরফ গনি মুখ খুললেন।
তাঁর একটি ভিডিও বার্তা সামনে এসেছে। তার আগে এদিনই সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর তরফে খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গনি ও তাঁর পরিবারকে মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সেদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকে তাঁর ভিডিও বার্তায় গনি বলেছেন, এখনও তিনি আফগানিস্তানের থাকলে তাঁকে আরও হিংসা দেখতে হতো। ঘটনা হল, তালিবানরা কাবুল দখল করার সময়ই সেদেশের সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আশরফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন বলে খবর রটে যায়। একইসঙ্গে রটে যায়, তিনি প্রচুর টাকা-পয়সা ব্যাগে ভরে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন একদিন আগেই আফগানিস্তান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে গনি সরকার এবং সে দেশের সেনাবাহিনীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন। বাইডেন বলেন, যখন আফগান রাষ্ট্রনেতারা এবং সে দেশের সেনাবাহিনী নিজেদের রক্ষা করতে পারছে না, তখন মার্কিন সেনার আগবাড়িয়ে সেদেশে পড়ে থেকে গৃহযুদ্ধ সামলানোর কোনও ঠেকা নেই।
এই প্রসঙ্গে ন্যাটো প্রধান জেমস স্টলটেনবার্গ একই কথা বলে আফগান সেনা এবং আশরফ গণির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। এবং তালিবানরা যে সেদেশে হিংসার আমদানি করেছে তার নেপথ্য কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন।
এদিন গনি বাইডেন এবং স্টলটেনবার্গের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, যারা ঘটনার সত্যাসত্য বিস্তারিত জানেন না, তাদের কথা শুনে আমাকে বিচার করা ঠিক হবে না। পাশাপাশি তিনি নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, তালিবানদের সঙ্গে আফগান সরকারের আলোচনা কোনও ইতিবাচক জায়গায় পৌঁছতে পারেনি বা তা ফলপ্রসূ হয়নি।
গনির অভিযোগ, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে তালিবানদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি। যার ফলে তাঁকে দেশ থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছেন যে গনি চারটে গাড়ি এবং হেলিকপ্টারে প্রচুর নগদ নিয়ে দেশ ছেড়েছেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
গনি বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সরকারের কাছে যাচাই করে নেওয়া যেতে পারে আমি এমনকী আমার জুতো পাল্টানোর সময় পাইনি। আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা আমাকে সঙ্গে সঙ্গে দেশ ছাড়তে বলে। কারণ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আমার প্রাণ সংশয় ছিল।