ব্যুরো রিপোর্ট: উৎসবের মরশুমে মহারাষ্ট্র জুড়ে ইতিমধ্যেই গণেশ চতুর্খীর আনন্দ প্রায় মধ্যগগনে। আপাতত ১০ দিনের এই উৎসবে এগিয়ে আসছে গণেশ ভাসানের দিন। এদিকে,তারই মাঝে ফের একবার হু হু করে বেড়ে গেল ভারতের করোনার অঙ্ক।
ভারতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে আক্রান্ত ৩০ হাজারের উপর। যেখানে মঙ্গলবারের সংখ্যা নিয়ে বুধবার যে রিপোর্ট পেশ করা হয়, তাে দেখা গিয়েছে আক্রান্ত ছিল ৩৮ হাজারের ঘরে। ফলে উদ্বেগ অব্যাহত রয়ে গিয়েছে।
এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা ও গবেষণা দাবি করছে যে করোনার প্রবল প্রকোপ কমাতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাই শেষ কথা হতে চলেছে। মার্কিনি সমীক্ষা অনুযায়ী, যে ভ্যাকসিনগুলি আপাতত বাজারে এসে গিয়েছে তা দিয়েই করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দমন করা যাবে।
প্রসঙ্গত, এই ডেল্টার দাপটে দেশের একটা বড় অংশ কার্যত বিধ্বস্ত। শুধু তাই নয়, ইউরোপের বুকেও ডেল্টার প্রবল প্রতাপ অব্যাহত। তারই মাঝে বারবার এসেছে মু ভ্যারিয়েন্টের রমরমা। এই পরিস্থিতিতে মু ভ্যারিয়েন্টকে দমন করে বিশ্বস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা হু থেকে শুরু করে একাধিক দেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছে।
সেই জায়গা থেকে ভারতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভ্যাকসিনেশনের সংখ্যা ৬৫,৫১,৪২৩ জন। যা নিঃসন্দেহে একটি বড় অঙ্ক।এদিন করোনার যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে,তাতে বলা হয়েছে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনার জেরে আক্রান্ত ৩০, ৫৭০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩৮,৩০৩ জন।
দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৩৩,৪৭,৩২৫ জন। অ্যাক্টিভ কেস ৩,৪২,৯২৩ জন। মোট সুস্থতার সংখ্যা ৩,২৫,৬০,৪৭৪ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ৪,৪৩,৯২৮ জন। মোট ভ্যাকসিনেশন ৭৬,৫৭,১৭,১৩৭ জনের হয়েছে।
গতকালের রিপোর্টে যে পরিসংখ্যান এসেছে , তাতে দেখা গিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ১০২ জন। মৃত্যু হয়েছিল ২৮৪ জনের। করোনা মুক্তের সংখ্যা গতদিনের তুলনায় বেশি। গতদিন করোনামুক্ত হয়েছিলেন ৩৭ হাজার ১২৭ জন।
আর মৃতের সংখ্যা গতদিনের তুলনায় বুধবার অনেকটাই কম। এদিকে, পর পর গিনের নিরিখে যদি মৃতের সংখ্যার তুলনা দেখা যায়, তাহলে জানা যাবে যে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছিল ৩৩৯ জনের, এরপর আজকের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৩১ জনের।
এদিকে, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের ডিরেক্টর সুজিত সিং জানিয়েছেন যে, মাস ছয়ের মধ্যেই ভারতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। যেখানে পর পর কয়েকদিনে দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজারের উরে গিয়েছে,
সেখানে ভ্যাকসিনেশনের গতিও বেশ বেড়েছে। তবে অতিমারী আগামী কয়েক মাসে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানা গিয়েছে। ওদিকে, বু এর তরফে বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন জানিয়েছেন যে, ধীরে ধীরে আঞ্চলিক ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে করোনা ।
ফলে সেইভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে সম্ভবত কিছুটা রেহাই মিলতে পারে আসন্ন দিনে।এদিকে, করোনার তৃতীয় স্রোত নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কের সঞ্চার হয়েছে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলজির অধ্যাপক জ্ঞানেশ্বর চৌবের মতে আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় স্রোত।
সেই জায়গা থেকে সকলকেই নিজের মতো করে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে উৎসবের মরশুমে। তাঁর মতে একটি বিশেষ প্রোটেকটেড গ্রুপের জন্য করোনা সেভাবে ছড়াতে পারবে না তৃতীয় স্রোতে। ফলে করোনার তৃতীয় স্রোত ভয়ঙ্কর হলেও তা সেভাবে জাঁকিয়ে বসবে না।
ফলে ভ্যাকসিনেশনের জন্যই করোনার তৃতীয় স্রোত খানিকটা হলেও কমতির দিকে যেতে পারে। ফলে তার থেকে দেশে সেভাবে করোনার প্রবল দংশন শুরু হবে না। উল্লেখ্য, দক্ষিণে কেরলে যেখানে ৩০ হাজারের উপর একটা সময় করোনার প্রবল প্রকোপ দেখা গিয়েছে,
সেখানে উত্তর প্রদেশে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ জন করোনা আক্রান্তের খবর এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কার্যত এই ধরনের অবস্থা দেশের জন্য খানিকটা হলেও সুখকর বার্তা দিচ্ছে। ফলে অধ্যাপকের মতে, করোনার তৃতীয় স্রোত সেভাবে ভয়াবহ না হলেও আর তিন মাসের মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে।