ব্যুরো রিপোর্ট: গত ১৮৭ দিনের নিরিখে এই প্রথমবার করোনার অ্যাক্টিভ কেস হু হু করে নেমে গেল। করোনার জেরে যেভাবে উৎসবের মরশুমে আক্রান্তের সংখ্যা প্রবলভাবে বাড়তে থাকে, সেই জায়গা থেকে এদিনের রিপোর্টে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা ও সুস্থতার সংখ্যা ৩১ হাজারের ঘরে রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
এদিকে,করোনার জেরে উৎসবের মরশুমে একাধিক সতর্কতামূলক বন্দোবস্ত নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক দেশের করোনা পরিস্থিতি।ভারতে করোনা পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগের জায়গায় যেতে শুরু করেছে।
এযাবৎকালে কোনও বড় করোনা স্রোত আসার আগে যে ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে,তাতে বারবার করোনার আক্রান্তের সংখ্যায় দৈনিক হারে তুমুল বৃদ্ধি ও কমতির ট্রেন্ড লক্ষ্য করা গিয়েছে। সেই জায়গা থেকে করোনা পরিস্থিতির মাঝে এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে দেখা গিয়েছে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১,৯২৩ জন, সুস্থ হয়েছেন ৩১,৯৯০ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৮২ জনের।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই করোনার জেরে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে নেমে গিয়েছিল। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজারের ঘর ছুঁয়েছে গত ২১ সেপ্টেম্বর। এরপর ফের একবার ২৩ সেপ্টেম্বর এই সংখ্যায় ব্যাপক উত্থানের ফলে উদ্বেগ অব্যাহত রইল।উল্লেখ্য, করোনার জেরে সার্বিক আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩,৩৯,৯০,০৪৯ জন।
দেশে আপাতত ৮৩,৩৯,৯০,০৪৯ জন করোনার দংশনে আক্রান্ত। ১৮৭ দিনে সবচেয়ে কমেছে অ্যাক্টিভ কেস। অ্যাক্টিভ কেসের নিরিখে এদিন কার্যত স্বস্তি দিয়েছে পরিসংখ্যান। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে অ্যাক্টিভ কেস ৩,০১,৬০৪ জনের মধ্যে রয়েছে। মোট সুস্থতার সংখ্যা ৩,২৮,১৫,৭৩১ জনের। মৃতের সংখ্যা ৪,৪৬,০৫০ জন। মোট ভ্যাকসিন নিয়েছেন এপর্যন্ত, ৮৩, ৩৯, ৯০,০৪৯ জন।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৭১,৩৮,৯০,০৪৯ জন।উল্লেখ্য, বিশ্বমঞ্চে করোনা নিয়ে ইতিমধ্যেই কোভিড ১৯ সামিটে বক্তব্য রেখেছেন মোদী। সেখানে তিনি ভ্যাকসিনের উৎপাদন ও কাঁচামালের সুষ্ঠু সরবরাহ নিয়ে সরব হয়েছেন। বিশ্বমঞ্চে করোনার দাপটের মাঝে মোদী ভারতের ভ্যাকসিনেশনের গতি ও উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তারই মাঝে , মোদীর বার্তা, আন্তর্জাতিক সফরকালে যে সমস্ত বিধি রয়েছে তা শিথিল করলেই করোনাকালে অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হতে পারে। উল্লেখ্য ব্রিটেনের কোয়ারেন্টাইন নীতি ও কো উইন অ্যাপ নিয়ে সেদেশের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে যে বিতর্ক উঠেছে তার মাঝে মোদীর এই বার্তা নিসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক।
এদিকে, ভারতে যেভাবে দুটি সংখযক করোনা ডোজ দেশের একটা বিপুল জনতাকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে, তা নিয়ে সামিটে ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী।গতকাল ১৮৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল অ্যাক্টিভ কেস। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু বলছে, করোনার মাঝে ডেল্টার দাপট হু হু করে বিশ্ব জুড়ে ঝড় তুলেছে, সেখানে এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে নিজেকে বাঁচাতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, গতকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৯৬৪। মোট করোনা আক্রান্ত ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩১ হাজার ৪৯৮। ২১ সেপ্টেম্বর যে পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে তাতে করোনা আক্রান্ত হয়েছিল ২৫ হাজার ১১৫ জন।
গতকালের রিপোর্টে করোনামুক্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ১৬৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৮৩ জনের। এই পরিস্থিতিতে দেশে করোনার তৃতীয় স্রোতের প্রবল দাপট নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ। করোনাকালে পরিস্থিতি কোনদিকে যায় তা নিয়ে উৎসবের মরশুম ঘিরে রয়েছে আতঙ্ক।
এদিকে, অগাস্টের শেষ থেকেই দেশে করোনার দাপটের জেরে তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল।এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে , গবেষণা বলছে, তৃতীয় স্রোত সম্ভবত আগামী তিন মাসের মধ্যে এলেও তার দংশন সেভাবে ভয়াবহ রূপ নিতে পারবে না।
আপাতত গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত দু দিনে পর পর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় কমতি ও পরে তার বৃদ্ধির এই ট্রেন্ডে বিব্রত অনেকেই। সেই জায়গা থেকে ফের একবার করোনার তৃতীয় স্রোত নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।