ব্যুরো রিপোর্ট: ভারতে করোনা পরিস্থিতিতে খানিকটা স্বাস্তি দিয়ে ফের একবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজারের ঘরে নামল। দেখা গিয়েছে গত কয়েকদিনে করোনার জেরে দৈনিক আক্রান্ত ৪০ হাজার থেকে ৩০ হাজারের ঘরে গিয়েছে।
তারমধ্যে প্রায় দৈনিক অর্ধেক আক্রান্তের খবরই এসেছে দক্ষিণের রাজ্য কেরল থেকে। এরই মাঝে এদিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঘিরে উদ্বেগের মাঝে দেশে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫,৪৬৭ জন হয়েছে।
একদিকে ডেল্টার রমরমা, অন্যদিকে থার্ড ওয়েভ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা। এই দুই উদ্বেগের সমাগমে রীতিমতো তোলপাড় দেশ। এদিকে, কেরলের করোনা ওয়েভ রীতিমতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে।
তবে গত কয়েকদিনে সেখানে যা দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে, তার থেকে অনেকটাই কম হয়েছে গত একদিনের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। কেরলের শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩,৩৮৩ জন। শেষ একদিনে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের। এদিকে,
গত ২৪ ঘণ্টার নিরিখে ভারতে সামগ্রিক মৃতের সংখ্যায় পতন দেখা গিয়েছে। দৈনিক যেখানে ৫০০ জনের কাছাকাছি মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে, সেখানে করোনার জেরে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃতের সংখ্যা ৩৫৪ জন। যে ঘটনা রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ।
শেষ ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫,৪৬৭ জন। দেখা যাচ্ছে দেশে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯,৪৮৬ জন হয়েছে। ফলে আক্রান্তের থেকে সুস্থতার সংখ্যা অনেকটাই কম।
দেশে মোট ভ্যাকসিনেটেড হয়েছেন, ৫৮,৮৯, ৯৭,৮০৫ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে টিকা দেওয়া হয়েছে ৬৩,৮৫,৯৭, ৮০৫ জনকে। এদিকে, এই পরিসংখ্যানকে সঙ্গে নিয়েই ফের একবার দেশে করোনার তৃতীয় স্রোত আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মনে করা হচ্ছে দেশে ফের একবার আছড়ে পড়তে পারে করোনার স্রোত। তবে তা অক্টোবরের সময়ে ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলেও ধারণা অনেকের। এই পরিস্থিতিতে অক্টোবর মাসে রয়েছে দুর্গাপুজো। এই দুর্গাপুজোর সময়ে এমন প্রবল স্রোত আছড়ে পড়ার উদ্বেগ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় দেশ।
তবে সেই জায়গা থেকে করোনার পরিসংখ্যান একদিনে ২৫ হাজারের ঘরে যেতে খানিকটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। এদিকে, কার্যত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যাবে মহারাষ্ট্রে।
সেই জায়গা থেকে আলাদা করে সতর্কতা অবলম্বন করছে মহারাষ্ট্র সরকার। আর মহারাষ্ট্রে সেই জায়গা থেকে জন্মাষ্টমীতে দহি হান্ডি উৎসব পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব সরকার।
করোনার জেরে দেশে যেমন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২৪,৭৪,৭৭৩ । সেখানে কেরলেই শুধু আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮,২৭,২৮৮ জন। ফলে করোনার জেরে দেশে মোট সুস্থতার সংখ্যা ৩,১৭,২০,১১২ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৩,১৯,৫৫১ জন।
মৃতের সংখ্যা মোট ৪,৩৫,১১০ জন এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে এদিন । এদিকে দেশে ভ্যাকসিনেশন নিয়ে প্রভূত পরিমাণে চলছে গবেষণা। সরকার করোনার ভ্যারিয়েন্টগুলির বিরুদ্ধে প্রতিটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার পরিমাপ খতিয়ে দেখছে বলে এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে।
এরফলে সেই জায়গা থেকে দেশের ভ্যাকসিনেশন ও তারপর নাগরিকদের সুস্থতা নিয়ে বেশ কঠোর মনোভাব ধরে রেখেছে কেন্দ্র। এদিকে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও দেশে প্রভূত পরিমাণে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর উঠে আসছে।
সেই জায়গা থেকে রীতিমতো উদ্বেগে দেশ। এদিকে, দিল্লিতে গত একদিনে ১৭ জনের দেহে করোনার সংক্রমণের চিহ্ন মিলেছে। ৪১ জন সুস্থ হয়ে ফিরেয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে করোনার তৃতীয় স্রোত নিয়ে একাধিক বক্তব্য রেখেছেন আইআইটি কানপুরের মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন,
আগামী নভেম্বর মাসে করোনার তৃতীয় স্রোত শিখরে উঠে যেতে পারে। যদি ডেল্টার চেয়েও বেশি ভাইরাল করোনার আর একটি নতুন রূপ বেরিয়ে আসে এবং সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে তা পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখনই করোনার তৃতীয় ঢেউ শিখরে উঠতে পারে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, তৃতীয় তরঙ্গটি দ্বিতীয় তরঙ্গের মতো আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে নাও পারে, তবে প্রথম তরঙ্গের মতো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।