লর্ডসে ভারত-পাক ফাইনাল! আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কীভাবে এমনটা হতে পারে?

লর্ডসে ভারত-পাক ফাইনাল! আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কীভাবে এমনটা হতে পারে?

ব্যুরো রিপোর্ট:  শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টেস্টে ২৪৬ রানে হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। প্রথম টেস্টটি বাবর আজমের দল ৪ উইকেটে জিতলেও সিরিজ জিততে পারেনি। এই ফলাফলের প্রভাব পড়েছে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায়। আগামী বছর লর্ডসের ফাইনালে কোন দুই দলকে দেখা যাবে তা নিয়ে চলছে যাবতীয় হিসেবনিকেশ।

উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের সম্ভাবনাও। আলোচনা করা যাক, তা কীভাবে সম্ভব?দক্ষিণ আফ্রিকা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে, প্রোটিয়াদের জয়ের শতকরা হার ৭১.৪৩ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া রয়েছে দুইয়ে, অজিদের জয়ের শতকরা হার ৭০ শতাংশ। আগামী মাসে ইংল্যান্ডে তিন টেস্টের সিরিজ রয়েছে প্রোটিয়াদের। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যবধান আরও বাড়াতে পারবে।

শ্রীলঙ্কা উঠে এসেছে তৃতীয় স্থানে। তাদের জয়ের শতকরা হার ৫৩.৩৩ শতাংশ। পাকিস্তান নেমে গিয়েছে পাঁচে, বাবর আজমদের জয়ের শতকরা হার ৫১.৮৫ শতাংশ। ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে, রোহিত শর্মার দলের জয়ের শতকরা হার ৫২.০৮ শতাংশ।শ্রীলঙ্কা চলতি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৬টির মধ্যে ৫টি সিরিজ খেলে ফেলেছে।

পয়েন্ট তালিকার প্রথম দুইয়ে থাকা দলগুলির চেয়ে তাদের পয়েন্টের ব্যবধানও অনেক। শ্রীলঙ্কার শুধু সিরিজ বাকি রয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। দুই টেস্টের সিরিজটি শ্রীলঙ্কা জিতলেও ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হবে না। ১-১ ড্র হলে শ্রীলঙ্কা ছিটকে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার এখনও ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাওয়ে সিরিজের সঙ্গে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলবে, ভারত সফরেও আসবে। ভারতের বাংলাদেশ সফর রয়েছে, তারপর দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ রয়েছে। পাকিস্তানের বাকি দুটি সিরিজ দেশের মাটিতেই, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড-সহ বাকিদের ফাইনালে পৌঁছানোর সম্ভাবনা কার্যত নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সব টেস্ট জিতলে ৬৫.৩৮ শতাংশে পৌঁছাতে পারবে। যদিও তাদের সিরিজ বাকি দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।পাকিস্তানের ফাইনালে ওঠার সুযোগ ভালো রয়েছে কারণ তাদের পাঁচটি টেস্টই রয়েছে নিজেদের দেশে।

যদি পাঁচটিতে পাকিস্তান জেতে তাদের জয়ের শতকরা হার পৌঁছে যাবে ৬৯.০৫ শতাংশে। যদি চারটি টেস্টে পাকিস্তান জেতে, একটিতে হেরে যায় তাহলে তাদের ঝুলিতে থাকবে ৪৮ পয়েন্ট ও জয়ের শতকরা হার হবে ৬১.০৯ শতাংশ। দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় তিনটি করে টেস্ট খেলবে, দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলবে দুটি টেস্ট।

ফলে প্রোটিয়ারা শীর্ষে থাকলেও খুব নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে না। যদি বিদেশ সফরে দুটি সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকা ১-২ ব্যবধানে হেরে যায় এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টেস্টে হারায় তাহলে জয়ের শতকরা হার থাকবে ৬০ শতাংশে। যদি দুটি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জেতে এবং একটি ১-২ ব্যবধানে হারে তাহলে শতাংশের হার দাঁড়াবে ৬৬.৬৭ শতাংশে।

ফলে ফাইনালে উঠতে অনেক হিসেবনিকেশের উপরও নির্ভর করতে পারে প্রোটিয়াদের ভাগ্য।অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে ভারত সফর। তার আগে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিনটি টেস্ট খেলবে অজিরা। ভারতে রয়েছে চারটি টেস্ট।

অস্ট্রেলিয়া যদি দেশের মাটিতে সব টেস্ট জেতে এবং ভারতে এসে সব টেস্ট হারে তাহলে জয়ের হার থাকবে ৬৩.১৬ শতাংশে। ৯টি টেস্টে যদি অজিরা ৬টিতে জেতে, তিনটিতে হারে তাহলে জয়ের শতকরা হার থাকবে ৬৮.৪২ শতাংশে। যা প্যাট কামিন্সের দলের ফাইনালে ওঠার পথ সুগম করে দেবে।

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চারটি টেস্টে জয়লাভ করে তাহলে রোহিত শর্মার দলের জয়ের শতকরা হার দাঁড়াবে ৬৮.০৬ শতাংশে। ফলে অজিরা যদি দেশের মাটিতে সব কটি টেস্ট জিতেও ভারতে আসে তাহলেও টিম ইন্ডিয়াকে টপকাতে পারবে না। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান যদি সব টেস্টে জেতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নেমে যায় তাহলে ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *