ব্যুরো রিপোর্ট: করোনার জেরে দেশে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছিল আক্রান্তের সংখ্যা। এদিকে, কেরলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাই সিংহভাগ দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় বড় প্রভাব ফেলেছিল। গত কয়েকদিনে যেকানে কেরলে ৩০ হাজারের ওপর করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ছিল,
সেখানে দেশে ৪৫ হাজারের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে দেশের সার্বিক দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার পরিসংখ্যান। এরপর এদিন করোনার জেরে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১,২২২ জন। সুস্থ হয়েছেন শেষ একদিনে ৪২,৯২৪ জন।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরলে করোনার জেরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের কিছুটা নিচে রয়েছে। এদিকে, দেখা যাচ্ছে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের মতো জায়গায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রবল হারে নেমেছে,
দৈনিক মৃতের সংখ্যা বেশ কয়েকদিন ধরে কমতির দিকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩১,২২২ জন। শেষ একদিনে করোনা কাটিয়ে উঠেছেন ৪২ ৯৪২ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃতের সংখ্য়া নেমেছে হু হু করে।
আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী বলা হয়েছে যে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ২৯০ জনের। অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে ৩,৯২,৮৬৪ জনের। দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৩০,৫৮,৮৪৩ জন।
মোট সুস্থ হয়েছেন ৩,২২,২৪,৯৩৭ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ৪,৪১,০৪২ জন। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, দেশে মোট ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, ৬৯,৯০,৬২,৭৭৬ জনকে। এই পরিস্থিতিতে কেরলে ভয়েব বাতাবরণ তৈরি করেছে নিপা ভাইরাসের মতো ভয়াবহ সংক্রমণ।
কেরলে কয়েকদিন আগেই এক ১২ বছরের বালকের দেহে মিলেছে নিপা ভাইরাসের চিহ্ন। যে ১২ বছরের বালক নিপা দংশনে কেরলে প্রাণ হারিয়েছে, তার সংসর্গে আসা ১১ জনের দেহে ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেছে নিপার উপসর্গ।
বালকের মায়ের দেহেও দেখা দিয়েছে নিপা ভাইরাসের উপসর্গ। ফলে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই কার্যত ত্রস্ত গোটা কেরল। এদিকে, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে করোনা আক্রান্তদের মাঝে নিপা আক্রান্ত ও নিপার প্রাদুর্ভাব নিয়ে কার্যত সমস্যার মূলে চলে গিয়েছে সরকার।
ফলে এখন নতুন করে নিপা দমনে কার্যত সাফল্যের মুখ দেখতে চলেছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে কেরলে নিপা ভাইরাসের প্রবল প্রকোপ দেখে কেরল। তারপর তাকে দমন করে রাজ্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেই ফের ২০২০ সালে করোনার দংশন শুরু হয় কেরল থেকে।
এরপর ফের একবার নতুন করে অজানা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে কেরল। পরবর্তীকালে ২০২১ সালে করোনা ভাইরাস ও নিপা ভাইরাস দুইয়ের সঙ্গেই তুমুল লড়াই শুরু করে দেয় কেরল।
এই পরিস্থিতিতে যেখানে দেশে করোনার জেরে তৃতীয় ওয়েভ আসার আশঙ্কার রয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে কেরলে ভ্যাকসিনেশন বাড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই করোনার দাপট কমানোর দিকেও নজর কড়া করছে প্রশাসন।
যার ফসল গত কয়েকদিনে দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বহু গবেষণা বলছে, এবার করোনার তৃতীয় ওয়েভ স্থানীয় স্তরে হতে পারে। যার কিছুটা প্রভাব বহু রাজ্যের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।এদিকে, গত একদিনে দেশে কার্যত রেকর্ড সংখ্যক ভ্যাকসিনেশন হয়েছে।
এই ঘটনাকে ফের একবার মাইলস্টোন হিসাবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী মোদী টুইটও করেছেন। অন্যদিকে সারা দেশ উৎসবের মরশুমের আগে করোনার তৃতীয় ওয়েভের আক্রমণ নিয়ে শঙ্কিত গোটা দেশ।
সেই পরিস্থিতিতে গতকালের রিপোর্ট বলছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮,৯২৪ জন। গতকালের চেয়ে ৮.৯ শতাংশ কমেছে দৈনিক করোনা সংক্রমণ। মহারাষ্ট্রে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
কেরলের পরই মহারাষ্ট্রে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় তা রীতিমতো আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব বলছে ৮.৯ শতাংশ কমেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। উল্লেখ্য,
ভারতে করোনার তৃতীয় ওয়েভ অগাস্টের শেষ থেকেই আসবে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মণীন্দ্র আগারওয়ালের নয়া গবেষণা ও সমীক্ষা বলছে, এবার পুজোর পর অর্থাৎ অক্টোবরের শেষ থেকে করোনার তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়তে পারে ভারতে।
সেক্ষেত্রে দুর্গাপুজোর পর কালীপুজো ও ক্রিস্টমাস পর্যন্ত এর প্রভাব পড়লেও পড়তে পারে। গতকালের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে,গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে মারা গিয়েছেন ২১৯ জন। এদিকে, দেশে কেরলের সঙ্গে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নিপাও।
গোটা দেশেই যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমছে তখন মিজোরামের রাজধানী আইজলে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজলে বিধি নিষেধ লাগু রয়েছে।