ব্যুরো রিপোর্ট: আফগানিস্তানের একের পর এক শহর দখল করে চলেছে তালিবানরা। ইতিমধ্যেই জালিবানরা জালালাবাদ দখল করে নিয়েছে। এবার দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ করতে কাবুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তালিবানরা।
রবিবার আফগানিস্তানের বড় শহর জালালাবাদ দখল করার পর রাজধানী কাবুল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাই এবার কাবুল দখল করে দখলদারি সম্পূর্ণ করতে মরিয়া তালিবানরা।
মাজার-ই-শরিফের উত্তরে তালিবান-বিরোধী ঘাঁটি দখল করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই জঙ্গিরা রবিবার আফগানিস্তানের পূর্ব জালালাবাদ শহর দখল করে নেয়।
মাত্র ১০ দিনের মধ্যে সরকারি বাহিনী এবং যুদ্ধাপরাধী মিলিশিয়াদের বিস্ময়কর ‘পরাজয়’ ঘটে তালিবানদের হাতে। বিনা যুদ্ধে প্রবেশ করে রবিবার সকালে তালিবানরা সাদা পতাকায় সারা শহর মুড়ে দেয়। রাতারাতি রং বদলে যায় জালালাবাদের।
রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনির সরকার কাবুলকে ঘিরে রেখেছে। ফলে রাজধানী দখল করতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের প্রয়োজন। কিন্তু এতদিন তালিবানদের সঙ্গে লড়াইয়ে অনেক শক্তিক্ষয় হয়েছে।
শনিবার গনি এই মহাসঙ্কটের একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে গিয়ে সেনাবাহিনীকে পুনরায় একত্রিত করার আহ্বান জানান।মাজার-ই-শরিফ এবং জালালাবাদের দখল হারানো গনি এবং
তাঁর সরকারের জন্য বড় আঘাত। এটি তালিবানরা দখল করে নিয়েছে। কাবুল থেকে এক ঘন্টারও কম দূরত্বে রয়েছে তাঁরা। রাজধানী কাবুল রক্ষা করতে যেকোনো আলোচনার কার্ড তাঁরা হাতে রেখেছে।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন অতিরিক্ত এক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাতে দূতাবাসের কর্মী এবং হাজার হাজার আফগান যারা আমেরিকান বাহিনীর জন্য কাজ করেছেন, তাদের রক্ষা করা যায়।
এখন তালিবানদের প্রতিশোধের আশঙ্কা করছেন মার্কিন সেনারা। কাবুল থেকে তাই জরুরি ভিত্তিতে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সাহায্য করবেন তাঁরা।
মে মাসে বাইডেন ঘোষণা করেছিলেন যে, আফগানিস্তানে ২০ বছরের সামরিক উপস্থিতি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এই প্রত্যাহারের ঘটনা। আফগান সশস্ত্র বাহিনীর পতনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তটি বুমেরাং হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাজার-ই-শরিফে তালিবান যোদ্ধারা দ্রুত দখল নেন। তারপর যে যার মতো যানবাহন ও মোটরবাইক নিয়ে প্যারাড করেছে, তালিবানদের দখলদারি উদযাপনে বাতাসে গুলি ছুড়ছে।
আনন্দের বহিঃপ্রকাশে তাঁরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে শহরে। এরপর তালিবানরা কাবুল অভিমুখে রওনা দিয়েছে। কাবুল দখল করা তাঁদের লক্ষ্য। এই অবস্থায় আফগান সামরিকরা কী অবস্থান নেন, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।