ব্যুরো রিপোর্ট: এ যেন এক সিনেমার গল্পের বাস্তবায়ন। পুরোনো সিনেমায় অনেক সময় আমরা দেখতে পেতাম মেলায় হাড়িয়ে যাওয়া ২ ভাই বা ২ বোন কখনও বা ভাই বোন হঠাৎ মেলায় হাড়িয়ে যাওয়ার পর সেই মেলা দেখে নিজের ভাই/বোনকে ফিরে পায়। হায়দ্রাবাদে ঠিক এরকম এক ঘটনা ঘটল।
তবে এখানে মেলায় ন তবে মেলার ছবি দেখে ৩ বোন খুঁজে পেল একে অপরকে। ঘটনা হল তিন বোনের মা মারা গিয়েছিল আগেই। তিনবছর আগে বাবাও মারা যায় তাদের।তারপর তিন বোন ছিটকে পড়ল তিনদিকে।
দুই বোনের ঠাঁই হল দু’টি পৃথক অনাথ আশ্রমে। কোথাও জায়গা না পেয়ে পথে ঘুরতে লাগল আর এক বোন। কয়েক বছর পর গত রবিবার ভাগ্য আচমকাই মিলিয়ে দিল তিনজনকে।
হায়দ্রাবাদের জেলা ওয়েলফেয়ার অফিসার একেশ্বর রাও স্বীকার করেছেন, যেভাবে তিন বোন পরস্পরকে ফিরে পেয়েছে, তাকে ভাগ্য ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।
একেশ্বর রাও জানান, রাজ্যের অনাথ আশ্রমগুলিতে শিশুদের নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে একটি অনাথ আশ্রমে বিজ্ঞান মেলা হয়েছিল।
সেই বিজ্ঞান মেলার ফটো অন্যান্য অনাথ আশ্রমেও পাঠানো হয়। ছবি দেখে দুই বালিকা তাদের অনাথ আশ্রমের কেয়ারটেকারদের বলে, একজনকে চেনা মনে হচ্ছে। সম্ভবত সে তার হারিয়ে যাওয়া বোন।
সেই সূত্রে দুই বোনের দেখা হয় আবার। তারা তখন অনাথ আশ্রম কর্তৃপক্ষকে জানায়, তাদের আরও একটি বোন আছে। ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টের অফিসাররা জানতে পারেন, তাদের ছোট বোন দিদিমার সঙ্গে থাকত।
দিদিমা মারা যাওয়ার পর সে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। ছোট বোনকে খুঁজে তার দুই দিদির সামনে উপস্থিত করানো হয়। তারা প্রথমে ছোট বোনকে চিনতে পারেনি। কিন্তু ডিএনএ টেস্টে দেখা যায়, রাস্তায় পাওয়া মেয়েটিই দু’জনের হারিয়ে যাওয়া বোন।
জানা গিয়েছে, তিন বোনকে খোঁজার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেছিল তেলঙ্গানা পুলিশ। ২০১৫ সালে তারা শুরু করেছে ‘অপারেশন মুসকান’। সেই প্রকল্পে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খুঁজে বার করা হয়।
এখনও পর্যন্ত পুলিশ ২২ হাজার হারিয়ে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার করেছে। তাদের অনেকে নেপাল এবং পশ্চিমবঙ্গে পাচার হয়ে গিয়েছিল। তেলঙ্গানা পুলিশের ডিজি এম মহেন্দ্র রেড্ডি জানান, হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খুঁজে বার করার জন্য তাঁদের স্পেশাল টিম আছে।
তাতে মহিলা কনস্টেবলরাও আছেন। ডিজি জানান বেশিরভাগ শিশুকে উদ্ধার করে তারা পরিবারের কাছে ফেরত পাঠান। সেজন্য হারিয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবারগুলিকেও খুঁজে বার করতে হয়। যাদের পরিবার নেই, তাদের অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়।