ব্যুরো রিপোর্ট: তাজমহল নাকি শিব মন্দিরের উপর তৈরি। তাজের লুকনো কোনও এক প্রকোষ্ঠে না কি বাস করেন মহাদেব। এই নিয়ে বহু বছর ধরে দেশে বিতর্ক চলেই আসছে। বিতর্ক নতুন করে চাগাড় দিয়েছিল জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কের পরে। বিজেপি নেতা একদম সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে এ নিয়ে পিটিশন দায়ের করে দেন। সেখানে দাবি করেন তাজের ২২ টি বন্ধ ঘরে দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে।
তবে সম্প্রতি একটি আরটিআই দাখিল করা হয়েছিল এ নিয়ে। জানতে চাওয়া হয় তাজের অন্দরে কোথাও কী কোনও মূর্তি আছে ? বা তাজ কী কোনও মন্দিরের উপর তৈরি। মূর্তি ও মন্দিরের এয় প্রশ্ন নিয়ে সরাসরি উত্তর দিল এএসআই। স্পষ্ট জানিয়ে দিল তাজের মধ্যে এসব কিস্যু নেই।
একটি আরটিআই-এর জবাবে, ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ (এএসআই) উত্তর দাখিল করে বলেছে যে তাজমহলে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি পাওয়া যায়নি। এটাও স্পষ্ট বলা হয়েছে যে মন্দিরের জমিতে তাজ নির্মিত হয়নি। ২০ জুন এই আরটিআই দায়ের করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত এস গোখলে।
তথ্যের জন্য, প্রথম প্রশ্নে, সাকেত এস গোখলে প্রমাণ চেয়েছিলেন যে তাজমহল কোনও মন্দিরের জমিতে তৈরি কী না ? একই সঙ্গে তার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, সেলারের ২২টি কক্ষে দেবতার মূর্তি থাকার বিষয়টি সত্য কি না? প্রথম প্রশ্নের উত্তরে, ‘ASI’-এর কাছ থেকে এক শব্দের উত্তর পাওয়া যায়। তাঁরা বলে দেন, ‘না’।
একই সঙ্গে দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, ‘সেখানে কোনো মূর্তি নেই’।৭ মে, অযোধ্যা বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ ডঃ রজনীশ সিং আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন, যার অধীনে তাজের ২২ টি কক্ষ খোলার দাবি জানানো হয়েছিল। তিনি হাজার হাজার হিন্দুর তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে ওই ঘরে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি রয়েছে।
পিটিশন দাখিল করে তিনি বলেছিলেন যে এর রহস্য অবশ্যই বিশ্বের সামনে আসা উচিত। সেবার সুপ্রিম কোর্ট এক্কেবারে কড়া উত্তর দিয়েছিল বিজেপি নেতাকে। বলেছিল ভালো করে পড়াশোনা করে তারপর এ নিয়ে পিটিশন করতে। সঙ্গে এএসআই আবার খান কুড়ি ছবি প্রকাশ করে তাজের তলার অংশের যা নিয়ে বিতর্ক এবং বলে দেয় এখানে এসব কিচ্ছু নেই।
রজনীশ সিং তদন্তের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে একটি কমিটি গঠনের দাবিও করেছিলেন। এরপর থেকেই তাজমহলের রহস্যময় কক্ষ নিয়ে আলোচনা জোরদার হয়। তবে, ঐতিহাসিকরা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তাজমহলে ধর্মের রঙে ছেটানো উচিত নয়, কারণ এটি একটি বিশ্বের ঐতিহ্য।তাৎপর্যপূর্ণভাবে,
এটি প্রথমবার নয় যে তাজমহলকে দাবি করা হয়েছিল যে তাজের ভূমিতে দেবতার মূর্তি এবং একটি মন্দির রয়েছে। এর আগেও হিন্দু সংগঠনগুলো এ নিয়ে আওয়াজ তুলতে এসেছিল। তখনও ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক দপ্তর সেখানে মূর্তি থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছিল।