ব্যুরো রিপোর্ট: সকাল থেকে কলকাতা-সহ আশপাশের এলাকায় আকাশের মুখ ভার। অন্যদিনের মতো অস্বস্তির আবহাওয়া উধাও। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবারেই আছড়ে পড়তে চলেছে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত।
পূর্ব-মধ্য এবং উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে মায়ানমার উপকূলের কাছে এই ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার পরে তার অভিমুখ হল বাংলার উপকূল। যার জেরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।মঙ্গলবার সকালে দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,
আগামী ৪৮ ঘন্টা অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে কোনও জেলাতেই আপাতত ভারী বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই। তবে যে কোনও জায়গাতেই বর্ষার বৃষ্টি হতে পারে। এই মুহূর্তে মৌসুমী বায়ু হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় দুর্বল,
তবে দিন কয়েকের মধ্যে সেই অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা। আগামী দিন কয়েকে দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই জানানো হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফে।
এদিন সকালে দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ২৯ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কোনও কোনও জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রামের কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর বৃহ্স্পতিবার সকালের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
তবে পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না।মঙ্গলবার সকালে দেওয়া কলকাতা ও আশপাশের এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,
আগামী ২৪ ঘন্টায় আকাশ সাধারণভাবে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা । কয়েক পশলা বৃষ্টি কিংবা বজ্রবিদ্যুত কিংবা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এইসব জায়গায়। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩০ ও ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে।
মৎস্যজীবীদের প্রতি দেওয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘন্টায় ৪৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। যে কারণে আপাতত ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের জন্য সাধারণ মানুষের জন্য দেওয়া সতর্কতায় বলা হয়েছে, ভারী বৃষ্টির জেলে নদীগুলির জল বাড়তে পারে। পুরসভার নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হতে পারে। জমিতে থাকা ফসলের ক্ষতি হতে পারে। কাঁচা রাস্তারও ক্ষতি হতে পারে।
পাশাপাশি বজ্রপাতের সময় সাধারণ মানুষকে ঘরে ভিতরে কিংবা পাকা কোনও ছাউনির নিচে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনও জায়গায় বেরনোর আগে, সেখানকার ট্রাফিক পরিস্থিতি কী তাও খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে।
যেসব জায়গায় সাধারণভাবে জলমগ্ন হয়, সেইসব এলাকা এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অতি পুরনো কোনও বাড়ি ছেড়ে যেতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপকূল এলাকায় পর্যটকরা যাতে না যান, সে ব্যাপারেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ব্র্যাকেটে আগের দিনের তাপমাত্রা
আসানসোল (২৪.১)
বালুরঘাট (২৭.৬)
বাঁকুড়া (২৪.৩)
ব্যারাকপুর (২৬.৪)
বহরমপুর (২৫.৪)
বর্ধমান (২৫.৪)
ক্যানিং (২৬)
কোচবিহার (২৬.২)
দার্জিলিং (১৫.৫)
দিঘা (২৪.৪)
কলকাতা (২৬.১)
মালদহ (২৮.৪)
পানাগড় (২৪.৯)
পুরুলিয়া (২৪.১)
শিলিগুড়ি (২৫)
শ্রীনিকেতন (২৪.৮)
মৌসুমী অক্ষরেখা এখনও তার নির্দিষ্ট অবস্থানের দক্ষিণে অবস্থান করছে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিন এই অবস্থানেই থাকবে সেটি, যেমনটি গত কয়েকদিন ধরে টানা রয়েছে। এই মুহূর্তে মৌসুমী অক্ষরেখাটি জয়সলমীর,
উদয়পুর, আকোলা, চন্দ্রপুর, হয়ে উত্তর তেলেঙ্গানার নিম্নচাপ এলাকার মধ্যে দিয়ে সংলগ্ন দক্ষিণ ছত্তিশগড়, বিদর্ভ, বিশাখাপত্তনম হয়ে পূর্ব-দক্ষিণ দিতে অগ্রসর হয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।