ব্যুরো রিপোর্ট: পাড়ার প্রতিটা ছাদ এদিন ভরে থাকে। ছাদ থেকে ছাদে শুধুই ‘ভোকাট্টা’র ডাক! আকাশ জুড়ে নানা রঙের ঘুড়ির আনাগোনা , এই দৃশ্যই কার্যত বিশ্বকর্মা পুজোতে দেখে থাকে আপামর বাঙালি। তবে , এবারের বিশ্বকর্মাপুজো আকাশের মুখভর নিয়েই কাটাতে হবে বঙ্গবাসীদের।
এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় যে শুধু আকাশের মুখ ভার থাকবে তা নয়, সঙ্গে মুষলধারে বর্ষণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেখে নেওয়া যাক, বাংলার আবহাওয়ার পরিস্থিতি।আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় ফের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিশ্বকর্মা পুজোর সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টিতে ভাসবে বাংলার একাধিক জেলা। এদিন সকাল থেকে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমানে। অন্যদিকে, কলকাতা , হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
তবে ১৮ সেপ্টেম্বর সেভাবে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা নেই। তবে জেলাতে কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে বর্ষণের ফলে তাপমাত্রায় সেরকম কোনও বড় পরিবর্তন হবে না।এদিকে, উত্তরবঙ্গে ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে কোনও জেলাতেই কার্যত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা নেই বলেই জানানো হয়েছে পূর্বাভাসে।
তবে ,সমস্ত জেলাতেই এদিন উত্তরবঙ্গে প্রবল বর্ষণ হবে। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং এবং আলিপুরদুয়ারের কোনও কোনও জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এদিন কোনও কোনও উত্তরবঙ্গের জেলায় এদিন বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা ধরনের বর্ষণ হতে পারে।
তবে কলকাতার এদিন সেভাবে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা নেই। লাগাতার ভারী বর্ষণের জেরে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে জল জমার ছবি আগেও দেখেছে কল্লোলিনী তিলোত্তমা। তবে দুর্গাপুজোর আগে আর বিশ্বকর্মা পুজোর আবহে বর্ষণের পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেদিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা।
আর এই মেঘ বৃষ্টির খেলার মাঝে ঘুড়ি ওড়ানোর দিনে রীতিমতো কাদা , জলের দাপটই বর্তমান হতে চলেছে। কলকাতার তাপমাত্রা এদিন ৩৩.৫ ডিগ্রি থাকবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এদিন ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি।
এদিকে কলকাতার বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯৮ শতাংশ থাকতে পারে।প্রবল বর্ষণের জেরে বিধ্বস্ত উত্তরপ্রদেশ। বর্ষণের ভয়াবহতার জেরে লখনউতে সমস্ত স্কুল , কলেজ বন্ধ করার ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলায় ১০০ মিলিমিটার বর্ষণ হয়েছে বলে খবর।
বহু জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছে জল। ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাসের জেরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় জল দাঁড়াতে শুরু করে দিয়েছে। সেখানের ছয়টি জেলায় ইতিমধ্যেই বন্যার সতর্কতা রয়েছে।
বলা হচ্ছে আগামী দিনে বর্ষণের পরিমাণ বাড়তে পারে আরও। এদিকে এই পরিস্থিতির মাঝে দিল্লিতেে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা রাজধানীতে আপাতত প্রবল খারাপ আবহাওয়ার সম্ভবানা থেকে যাচ্ছে। এদিকে, এই পরিস্থিতির ফলে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত হতে শুরু করেছে।
বঙ্গোপসাগরের বুকে একটি নিম্নচাপ যেতে না যেতেই আরও একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এদিকে পর পর নিম্নচতাপের জেরে ফের একবার প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে বাংলার দক্ষিণ অংশে । জানা গিয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় এদিন ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে,নতুনভাবে তৈরি হওয়া বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অর্থাৎ ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে যেতে শুরু করছে বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনদিনে ঘূর্ণাবর্ত থেকে নিম্নচাপ তৈরি এবং তার সক্রিয়তার জানান দেবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দেশের একাধিক রাজ্যে আগামী কয়েকদিন প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।এদিকে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ভারতের বিভিন্ন অংশে লাগাতার বর্ষণ হয়ে যাবে।
মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পূর্ব রাজস্থান, গুজরাতে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে বঙ্গোপসাগরের বুকে একটি নতুন ঘূর্ণাবর্ত তৈরির জেরে তিনদিন বাংলায় দাপটের জেরে বর্ষণ হবে বলে জানা গিয়েছে।