ব্যুরো রিপোর্ট: ধর্ষণ সবসমযই ঘৃণ্য একটি অপরাধ, যার কোনও ক্ষমা হয় না। ধর্ষণকারীকে ফাঁসি দিলেও বোধহয় আক্রান্ত মহিলার যন্ত্রণা কম হবে না। দিল্লি নির্ভয়া কাণ্ডে দেখা গিয়েছে, অপরাধের বহু বছর পর চার দোষী সাব্যস্তকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
তবে ধর্ষণের চেষ্টা করার শাস্তি ফাঁসি না হলেও তা কড়া ধাঁচের। কিন্তু ধর্ষণের চেষ্টার শাস্তি যে এরকম অদ্ভুত হতে পারে তা না শুনলে বিশ্বাস হবে না। বিহারের মধুবনী এলাকার এক আদালতে এক ব্যক্তিকে তারই গ্রামে এক মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার জন্য হতচকিত করা শাস্তি দিল।
মধুবনী আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তিস্বরূপ আগামী ৬ মাস তার গ্রামের সব মহিলাদের পোশাক ধুয়ে ইস্ত্রি করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত ওই ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করেছে।ঝাঁঝরপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক অভিনাশ কুমার এই শর্তে অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করে যে সে আক্রান্ত মহিলা সহ গ্রামের সব মহিলার পোশাক ধুয়ে ইস্ত্রি করে দেবে বিনামূল্যে।
২০ বছরের লালন কুমার সাফি, যে পেশায় ধোপা, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তাকে এ বছরের এপ্রিলে হেফাজতে নেওয়া হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী জানিয়েছে যে তার মক্কেলের বয়স মাত্র ২০ বছর এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।
আইনজীবীরা আরও জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার পেশাগত যোগ্যতায় সমাজসেবা করতে ইচ্ছুক। মঙ্গলবার আদালত তাকে জামিন দেয়। মহিলাদের পোশাক ধোয়া ও ইস্ত্রি ছাড়াও আদালত অভিযুক্তকে ১০ হাজার করে দু’টি বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেছে।
যদিও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে এবং পুলিশের তদন্তের কাজও শেষ এই মামলায়। দুই পক্ষের মধ্যে নিষ্পত্তির আবেদনও করা হয়েছে। এই ৬ মাসের পরিষেবা সম্পূর্ণ হওয়ার পর অভিযুক্তকে গ্রাম পঞ্চায়েত বা অন্য কোনও সরকারি অফিসারের কাছ থেকে তার এই বিনামূল্যে পরিষেবার শংসাপত্র দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মাঝে মাঝেই এ ধরনের অদ্ভুত শাস্তির কথা কানে আসে। যেখানে অভিযুক্তকে হাল্কা শাস্তির মাধ্যমেই তার দোষ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। ঝাঁঝরপুরের এডিজে অভিনাশ কুমার অতীতেও বহু অদ্ভুত শাস্তির রায় শুনিয়েছে।
এ বছরের অগাস্টেই, লকডাউনে স্কুল খোলা নিয়ে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শিক্ষককে নির্দেশ দেন যে গ্রামের সব শিশুদের বিনামূল্যে পড়াসোনা শেখাতে হবে। তবে ধর্ষণের চেষ্টার শাস্তি এতটা লঘু হওয়ায় অনেকেই বিচারকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে।