জানেন কেন তিরুপতি মন্দিরে ভক্তরা দান করেন মাথার চুল!

জানেন কেন তিরুপতি মন্দিরে ভক্তরা দান করেন মাথার চুল!

ব্যুরো রিপোর্ট:  ভারতের বিখ্যাত তিরুপতি বালাজি মন্দিরে প্রতিদিন পঁচাত্তর হাজার থেকে নব্বই হাজার ভক্তের ভিড় হয়। মন্দিরে অধিষ্ঠিত বিষ্ণুর অবতার রূপ তিরুপতি।তিরুপতি ম্নদির যে বিশ্বের অন্যতম ধনী ম্নদির সে কথা অনেকেই জানেন।

ভক্তরা এখানে দুহাত ভরে দান করেন ভগবান তিরুপতিকে।তবে এখানকার দান সামগ্রী জানলে একটু অবাকই হবেন। দলে দলে ভক্তরা ন্যাড়া হয়ে নিজেদের মাথার চুল দান করেন এই মন্দিরে। সেই চুল বিক্রি করে মন্দিরের আয় হয় বার্ষিক দুশো কোটি টাকা।

প্রতিবছর দান সামগ্রীর মধ্যে থাকে ১.২ টন সোনা। প্রায় হাজার কেজি সোনায় মোড়া ভগবান তিরুপতির মূর্তি। কিন্তু কেনই বা দশকের পর দশক ভক্তবৃন্দ বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং মাথার চুল দান করেন? 

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণু বিবাহের সময় ধনদেবতা কুবেরের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এক কোটি টাকা এবং এক কোটি চোদ্দো লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা। এই বিপুল পরিমানের ঋণ নিয়ে ভেঙ্কটেশ রূপে বিষ্ণু পদ্মাবতী রূপী দেবী লক্ষ্মীকে বিবাহ করেন।

শেষাদ্রী পাহাড়ের মাথায় বিশ্বকর্মা নিজ হাতে ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর থাকার জন্য এই মন্দিরটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। তাই প্রতিবছর ভগবান বিষ্ণুর বৈবাহিক এই ঋণ পরিশোধ করে যাচ্ছেন অসংখ্য ভক্তবৃন্দ। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণের অর্থ জমা হয় মন্দিরের কোষাগারে।

অর্থের পাশাপাশি বহু ভক্তবৃন্দ তাদের চুল দান করেন এই মন্দিরে। প্রচলিত পুরাণকাহিনী অনুযায়ী শেষাদ্রী পাহাড়ে থাকতেন এক ,মেষ পালক। তিনি একদিন ভুলবশত ভগবান বিষ্ণুর মাথায় আঘাত করেন। আর সেই আঘাতেই ভগবানের মাথার চুল কিছুটা উঠে যায়।

গন্ধর্ব রাজকন্যা নীলাদেবী লক্ষ্য করেন ভগবানের মাথার চুল নতুনভাবে তৈরি হচ্ছে না। তাই তিনি যোগবলে নিজের মাথার চুল কেটে বসিয়ে দেন ভগবান বিষ্ণুর মাথায়। এই প্রচলিত কাহিনিকে বিশ্বাস করেই প্রতিনিয়ত ভক্তরা দান করে চলেছেন তাঁদের নিজেদের মাথার চুল।

দান সামগ্রী ছাড়াও মন্দিরের অন্যান্য আয় নিতান্ত কম নয়। ভক্তদের উদ্দেশ্যে রোজ মন্দিরের তরফ থেকে বিক্রি করা হয় দেড় লক্ষ লাড্ডু। প্রতিদিন অর্থের পাশাপাশি মন্দিরের থলিতে জমা হয় বিপুল পরিমাণ সোনা। পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত তিরুপতি বালাজি মন্দির ছিল ভারতবর্ষের অন্যতম ধনী মন্দির।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *