ব্যুরো রিপোর্ট: যেখানে জুলাইয়ে দক্ষিণ ভারতে ৬০.৪ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে, সেখানে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ৪৪.৭ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি কম হওয়া রাজ্যের তালিকায় পড়েছে পশ্চিমবঙ্গও । বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গ। অগাস্টের ১৫ তারিখের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না হলে ধান বপনেও অসুবিধা দেখা দেবে।
সেক্ষেত্রে ওই তারিখের মধ্যে ভারী বৃষ্টির কোনও নিশ্চয়তা নেই। সেক্ষেত্রে রাজ্য ফিরতে পারে ১২ বছর আগের দশায়।সাম্প্রতিক সময়ে ২০১০-এ রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতিজনিত কারণে খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন বাম সরকারের তরফে ১১ জেলায় খরা ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলায় এবার ২০১০-এরথেকেও খারাপ পরিস্থিতি। আবহাওয়া দফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ২০১০-এর জুনে বৃষ্টির ঘাটতি ছিল ১৬ শতাংশ আর এবারের জুনে তা ৪৮ শতাংশের মতো। অন্যদিকে ২০১০-এর জুলাইয়ে যেখানে বৃষ্টির ঘাটতি ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে এবারের জুলাইয়ে বৃষ্টির ঘাটতি ৪৬ শতাংশের মতো।
এই দুই মাসের বিপুল বৃষ্টির ঘাটতি কি অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে মেটাতে পারবে প্রকৃতি, সন্দিহান আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।এই বছরের জুলাইয়ে সারা দেশে যেখানে ১৬.৯ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে, সেখানে গাঙ্গেয় অববাহিকার ৪ রাজ্যে বৃষ্টির বিপুল ঘাটতি রয়েছে।
এর মধ্যে উত্তর প্রদেশে ৪৬ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৪৯ শতাংশ, বিহারে ৩৯ শতাংশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ২৬ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। সাধারণভাবে পূর্ব ভারত এবং বাংলায় ১৫ অগাস্টের মধ্যে ধান বপনের সময়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে এবার ধান বপন করতে পারবেন না বাংলার বহু কৃষক।
যার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে সাধারণ মানুষের ওপরে। যা নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞমহল।বাংলায় জুন ও জুলাইয়ে বৃষ্টির ঘাটতি যথাক্রমে ৪৮ ও ৪৬ শতাংশ। যার গড় করলে দাঁড়ায় ৪৭ শতাংশে। আর এই দুই মাসে দক্ষিণবঙ্গের যেসব জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি সব থেকে বেশি তার মধ্যে রয়েছে বীরভূম ৬৬ শতাংশ, মুর্শিদাবাদে ৬৩ শতাংশ,
নদিয়ায় ৬২ শতাংশ, বর্ধমানে ৪৪ শতাংশ এবং উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় যথাক্রমে ৪৬ ও ৪৩ শতাংশের মতো।এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে অগাস্টে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টি, বিশেষ করে অগাস্টের প্রথম দু সপ্তাহে তেমন কোনও আশা দেখছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
যার জেরে জেলায় জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন তাঁরা। এইঈ তালিকায় আরওবেশি জেলা যুক্ত হবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের। এখানেই শেষ নয়, একদিকে যেমন বৃষ্টি কম, অন্যদিকে সেই একই কারণে জলাধারগুলিতেও জলের কম পরিমাণের কারণে কৃষকদের কতটা সুবিধা হবে, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।