ব্যুরো রিপোর্ট: কমে যাচ্ছে গঙ্গার জল । বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গঙ্গায় প্রাপ্ত জল এবং নদী অববাহিকায় ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তরফে স্টেট অফ গ্লোবাল ওয়াটার রিসোর্সেস ২০২১ রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতি অন্য বেশ কয়েকটি জায়গাতেও দেখা গিয়েছে।
কয়েকটি গ্লোবাল হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে সিন্ধু অববাহিকা, সাও ফ্রান্সিসকো নদীর অববাহিকা, প্যাটোগোনিয়া এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মার্কিন অববাহিকা। তবে এর বিপরীত চিত্র অর্থাৎ ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ বেড়েছে তাও লক্ষ্য করা গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে নাইজার বেসিন এবং উত্তর আমাজন বেসিন।
তবে ইতিবাচক প্রবণতার থেকে নেতিবাচক প্রবণতাই বেশি বলেও মন্তব্য করা হয়েছে সেই রিপোর্টে।কোথায় কত জল সঞ্চিত রয়েছে তার ওপর রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। উল্লিখিত জায়গাগুলিতে মাটির ওপরের আর্দ্রতা, ভূগর্ভস্থ জল, তুষার, বরফ, গাছপালায় থাকা জল, নদী ও হ্রদের জল স্বাভাবিকের থেকে নিচে ছিল।
অনেক জায়গায় তা স্বাভাবিকের থেকে অনেক নিচে ছিল। সেই তালিকায় রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল, প্যাটাগোনিয়া, উত্তর আফ্রিকা, মাদাগাস্কার, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যবর্তী এলাকা, পাকিস্তান ও উত্তর ভারত।
অন্যদিক আফ্রিকার মধ্যভাগ, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরের অংশ বিশেষ করে আমাজন অববাহিকা, চিনের উত্তর অংশ এর বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা গিয়েছে।রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিমালয়, আলাস্কা, প্যাটাগোনিয়ায় তুষার ও বরফ গলে যাওয়া এবং সেচের কাজের জন্য ভূগর্ভস্থ জলে তোলাকে পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২১-এ পৃথিবীর অনেক জায়গাই স্বাভাবিকের তুলনায় শুষ্ক ছিল। এর পিছনে কারণ হিসেবে জলবায়ুর পরিবর্তন এবং লানিনার কথাও বলা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কোটি কোটি মানুষের প্রভাবিত হওয়ার কথাও বলা হয়েছে রিপোর্টে।
ভারতে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে প্রাকৃতিক কারণে ৭৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে এল নিনো খরা অর্থাৎ দুর্বল বর্ষার সঙ্গে যুক্ত অন্যদিকে লানিনা শক্তিশালী বর্ষা এবং শীতল শীতের সঙ্গে যুক্ত।হিমবাহ গলে যাওয়া এবং পিছনে সরে যাওয়ার প্রভাব গঙ্গা অববাহিকার থেকে সিন্ধু অববাহিকায় বেশি হতে পারে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এর মধ্যে গঙ্গা অববাহিকার উত্তরের অংশ অর্থাৎ উত্তরাখণ্ড হিমবাহের পিছনে সরে যাওয়ার কারণে বেশি প্রভাবিত হতে পারে। ডাউনস্ট্রিম এলাকার মধ্যে পঞ্জাব এবং পশ্চিম উত্তর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের জন্য ব্যাপকভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হয়। সেই কারণেও এইসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।