ব্যুরো রিপোর্ট: রাজ্য-রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন! ছাত্র পরিষদ থেকে রাজনীতিতে হাতে খরি। মাত্র ২৬ বছরেই তীক্ষ্ণ রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছিল। অ্যানথ্রোপলজিতে বিএসসি এবং আর্কিওলজিতে মাস্টার্স করার পরেও রাজনীতিতে দক্ষতা তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
অল্প বয়সেই সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হন।শুধু তাই নয়, ইন্দিরা গান্ধীরও খুব স্নেহের পাত্র হয়ে ওঠেন। অনেকে বলেন প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সীর মতো প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের ডানহাত হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর ধীরে কলকাতা পুরসভার মেয়র থেকে কংগ্রেসের গুরু দায়িত্ব সামলেছেন।
শুধু তাই নয়, দলবদলের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের মানুষ হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজ্য-রাজনীতি।সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর পাওয়া মাত্র শোকস্তব্ধ নির্বেদ রায়। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ইন্দিরা গান্ধী যাদের ছেলের মতো দেখেন তাঁদের মধ্যে একজন সুব্রতদা।
এটা আমার চোখে দেখা। শুধু তাই নয়, প্রিয়দারও খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তবে বাংলার অনেককে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছেন সুব্রতদা। অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেল। এমন রাজনীতিবিদ আর হবেন না বলেও মন্তব্য নির্বেদ রায়ের।বাংলায় যারা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রাখেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
শোকস্তব্ধ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুধু তাই নয়, সুব্রতবাবুর মৃত্যু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নক্ষত্র পতন বলেও দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতির। তিনি আরও বলেন, মাত্র ২৬ বছর বয়সে উনি ক্যাবিনেট মিনিস্টার হয়ে ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে কজন রাজনীতি ব্যাক্তিত্বের মধ্যে একজন ছিলেন বলেন মন্তব্য সুকান্ত মজুমদার।
একটা সময়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কংগ্রেস করেছেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন। এমণকি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে যথেষ্ট সম্মান দিতেন মালা রায়। সুব্রতদার প্র্যানে ভেঙে পড়েছেন তিনিও বলেন, সুব্রতদা,
প্রিয়দার হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছি। কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। গতকালও দেখা করে গিয়েছি। এত কথা বলছিলেন যে ভয় লাগছিল। কিন্তু এমণ দিন যে অপেক্ষা করছে বুঝতে পারিনি। এটা ঠিক হল না। মালা রায় বলেন, কাল ছুটি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু আজ সবশেষ।ফিরহাদ হাকিম জানান, সুব্রত দার মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। আজ এক বিরাট ক্ষতি হল।বিবৃতি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখলেন, ”সুব্রতদা ছাত্র আন্দোলনে সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকেছেন।
ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই আমি তাঁর সঙ্গে থেকেছি, তাঁর নেতৃত্বে বড় হয়েছি। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং শারদীয়া দুর্গাপূজার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
সুব্রতদার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আমার অগ্রজ ও অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ আমার কাছে এক বিরাট ক্ষতি শুধু নয়, রাজ্যের তথা দেশের রাজনৈতিক জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি”।