‘মহানদী’ ও ‘ঘর পালানো ছেলে’, এই দু’টি বাংলা উপন্যাস মনোনীত হল ‘ব্যাঙ্ক অব বরোদা রাষ্ট্রভাষা সম্মান’ পুরস্কারের জন্য

‘মহানদী’ ও ‘ঘর পালানো ছেলে’, এই দু’টি বাংলা উপন্যাস মনোনীত হল ‘ব্যাঙ্ক অব বরোদা রাষ্ট্রভাষা সম্মান’ পুরস্কারের জন্য

রিপোর্ট -দেবাঞ্জন দাস : ব্যাঙ্ক অব বরোদা (ব্যাঙ্ক) 24 মে প্রথম “ব্যাঙ্ক অফ বরোদা রাষ্ট্রভাষা সম্মান”-এর জন্য 12টি মনোনীত সাহিত্যকর্মের তালিকা ঘোষণা করল। এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত 12টি উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে দু’টি বাংলা উপন্যাস। সেগুলির নাম হল ‘মহানদী’ ও ‘ঘর পালানো ছেলে’।

ভারতের বিভিন্ন ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্মগুলিকে স্বীকৃতি দিতে এবং সেগুলির প্রসারের উদ্দেশ্যে এবং সেই সঙ্গে ভারতের সেরা সাহিত্যকর্মগুলিকে হিন্দিতে অনুবাদের মাধ্যমে হিন্দি পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে,

এবং এই ভাবে বৃহত্তর সংখ্যক পাঠকের মনে উপন্যাসগুলি সম্পর্কে আগ্রহ জাগানো এবং সেগুলিকে তাঁদের সামনে হাজির করার লক্ষ্য নিয়ে অনন্য এই পুরস্কারের আয়োজন করা হয়েছে।

“ব্যাঙ্ক অফ বরোদা রাষ্ট্রভাষা সম্মান” পুরস্কার দেওয়া হবে মূল সাহিত্যকর্মের লেখক ও সেই সাহিত্যকর্মের হিন্দি অনুবাদক উভয়কেই। মূল সাহিত্যকর্মের লেখক পাবেন 21 লক্ষ টাকা এবং সেই

সাহিত্যকর্মের হিন্দি অনুবাদক পাবেন 15 লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও, পুরস্কারের জন্য শর্টলিস্ট হওয়া পরবর্তী পাঁচটি বইয়ের লেখকরা পাবেন 3 লক্ষ টাকা করে এবং সেই বইগুলির অনুবাদকরা পাবেন 2 লক্ষ টাকা করে।

কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মূল লেখক অনিতা অগ্নিহোত্রী ও মনোরঞ্জন ব্যাপারী এবং অনুবাদকদের মধ্যে অন্যতম লিপিকা সাহা একটি প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্যাঙ্ক অফ বরোদার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর জয়দীপ দত্ত রায়ের সঙ্গে।

ভারতীয় সাহিত্যের পরিসর ও গোটা ভারতের সাহিত্য-জগতের মানুষদের জন্য রাষ্ট্রভাষা সম্মান পুরস্কারের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন লেখকরা।

অনুষ্ঠানে এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর জয়দীপ দত্ত রায় বলেন, “দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অন্যতম হল ব্যাঙ্ক অফ বরোদা। এই ব্যাঙ্ক ব্যবসা ও আর্থিক জগতে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি নিজের সামাজিক দায়িত্বও পালন করে চলেছে।

এমনই এক উদ্যোগ নিয়ে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা শুরু করল ‘ব্যাঙ্ক অফ বরোদা রাষ্ট্রভাষা সম্মান’ পুরস্কার, যার উদ্দেশ্য হল দেশের বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যগুলিকে উৎসাহিত করা এবং সেগুলির জন্য এমন মঞ্চ তৈরি করে দেওয়া,

যাতে বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য আরও বৃহত্তর পাঠকের কাছে পৌছোতে পারে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে। পুরস্কারের অর্থমূল্য ও এর বহরের বিচারে অনন্য এই উদ্যোগ ও এই পুরস্কার হল এই দেশের সাহিত্য ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সম্মান।”

অনিতার উপন্যাস ‘মহানদী’-তে উপস্থাপন করা হয়েছে নদী ও তার পারে বসবাস করা মানুষের মধ্যে থাকা গভীর সম্পর্ককে। এই উপন্যাসের মাধ্যমে লেখক ভারতের মহানদী নামক নদীটির সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক,

ও বাস্তুতান্ত্রিক গুরুত্ব অনুসন্ধান করেছেন। সেই সঙ্গে মানবজীবন ও প্রাকৃতিক জগতের মধ্যে থাকা পারস্পরিক নির্ভরশীলতার দিকটির উপরেও আলোকপাত করেছেন। ‘মহানদী’ উপন্যাসটিকে হিন্দি সহ ইংরাজি ও ওড়িয়া ভাষাতেও অনুবাদ করা হয়েছে।
মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বই

‘ঘর পালানো ছেলে’-তে সমসাময়িক সমাজে একটি প্রান্তিক বালকের জীবন ও অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে এবং এখানে সামাজিক অসাম্য, বৈষম্য, এবং পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য সংগ্রামের মতো বিষয়গুলিকে গভীর ভাবে অনুসন্ধান করা হয়েছে।

এই পুরস্কারের জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের জুরির প্রধান হলেন প্রখ্যাত লেখক তথা বুকার পুরস্কারজয়ী গীতাঞ্জলি শ্রী। জুরির অন্যান্য সদস্যরা হলেন ভারতীয় কবি শ্রী অরুণ কমল, বিদ্যায়তনিক ব্যক্তিত্ব ও ইতিহাসবিদ পুষ্পেশ পন্থ, সমসাময়িক ভারতীয় কবি ও ঔপন্যাসিক অনামিকা, ও হিন্দি কাহিনী লেখক তথা অনুবাদক প্রভাত রঞ্জন।

মনোনয়নের জন্য আমন্ত্রণ প্রক্রিয়াটি এই ব্যাঙ্ক শুরু করেছিল 2023-এর মার্চ-এপ্রিলে। সেই সময় ভারতের বিভিন্ন ভাষার বেশ কয়েকটি সাহিত্যকর্ম এসে পৌঁছেছিল। সেগুলি থেকে বাছাই করে জুরি 12টি বইয়ের একটি তালিকা তৈরি করেছে। এই বইগুলিকে মনোনীত বইয়ের দীর্ঘ তালিকায় রাখা হবে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *