ব্যুরো রিপোর্ট: মহাকাশকে জানতে গবেষণার পর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে নাসা। সৌরজগতকেও জেনে উঠতে পারেনি এতদিনে। সৌরজগতের গ্রহেরই কূল-কিনারা পাননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সাফল্য যে নেই তা তো নয়, মহাকাশে ঢুঁ দিয়ে ইতিমধ্যেই চাঁদকে ছুঁয়ে ফেলেছে।
মঙ্গলেও পাঠিয়েছে মহাকাশ যান, শুক্র নিয়েও নাড়াঘাঁটা চলছে। তবে সেখানেই থেমে থাকল না, এবার সূর্যকেও ছুঁয়ে ফেলল নাসা।সূর্য যে শুধু পৃথিবীর কাছের নক্ষত্র, তা তো নয়! সৌরজগতেরই বাসিন্দা পৃথিবী। এই সূর্যের আলোতেই আলোকিত পৃথিবী।
কিন্তু সূর্যের তেজ ও দীপ্তির সন্ধান পায়নি পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা। সূর্যকে এতদিন ছুঁতেও পারেননি মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এতদিনে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অসাধ্য সাধন করল। পৃথিবী থেকে পাঠানো কোনও বস্তু ছুঁয়ে ফেলল সূর্যকে।
মঙ্গলবার আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই বিরাট সাফল্যের কথা ঘোষণা করেছে।নাসা নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদকে জানতে সক্ষম হয়েছে। চাঁদের হদিশ পেলেও, সূর্যকে তারা ছুঁতে পারেনি এতদিন।।
কিন্তু চেষ্টার অভাব ছিল না। নিরন্তর চেষ্টার শেষে অবশেষে সাফল্যের সন্ধান পেলেন নাসার বিজ্ঞানীরাও। সূর্যের দরজা তারা খুলে ফেলল। এমনকী ছুঁয়ে ফেলল সূর্যকে। এবার সূর্যের রহস্যও জানতে এবং জানাতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।
চাঁদ ও মঙ্গলের পাশাপাশি এবার সূর্য নিয়েও নিত্যনতুন আপডেট আসবে পৃথিবীতে।এতদিন সূর্যকে ছোঁয়া দূর অস্ত, দরজাই খুলতে পারেননি নাসার বিজ্ঞানীরা। সূর্যের বাইরের আবরণ অর্থাৎ করোনা ভেদ করাই দুঃসাধ্য ছিল বিজ্ঞানীদের।
ফলে সূর্যের ভিতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। বহু প্রচেষ্টার ফলে সূর্যের বহিরাবরণ ভেদ করতে সম্ভবপর হয়েছে নাসা। নাসার মহাকাশ যান পার্কার প্রবেশ করেছে সূর্যের ভিতরে। করোনা ভেদ করে সূর্যকে ছোঁয়ায় সেই সাফল্যে উন্মোচিত হয়েছে দিগন্ত।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানান করোনা ভেদ করে সূর্যের উঠোনে পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। এবার মূল বাড়িতে ঢুকে ‘পার্কার’ তদন্ত চালাবে। তাঁরা জানান, ওই স্থানের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রবল, চৌম্বক ক্ষমতাও তীব্র। ওই ক্ষমতার দ্বারাই সৌর-পদার্থকে তারা ধরে রাখতে সমর্থ হয়।
বাইরে বেরোতে দেয় না। যার ফলে সুরক্ষিত থাকে সৌরজগতের সমস্ত গ্রহ-উপগ্রহ, সুরক্ষিত থাকে আমাদের পৃথিবীও।সৌরজগতের সেই শক্তিশালী ক্ষেত্রেই হানা দিয়েছে নাসা। সেখান থেকে নমুনাও সংগ্রহ করেছে নাসার প্রেরিত তদন্ত-যান পার্কার।
২০১৮ সালে এই মহাকাশ যান সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল। তিন বছর পর তা ছুঁয়ে ফেলল সূর্যকে। এর আগে বহুবার সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছেও প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছিল পার্কার। কিন্তু এবার আর ব্যর্থতার মুখ দেখতে হল না,
সাফল্যের সোপান খুঁজে পেল ওই সৌর তদন্ত-যান।মহাকাশ যানটি সূর্যকে ছুঁয়ে ফেলায় মহাকাশ গবেষণার জন্য এক বিরাট উৎস পেলেন বিজ্ঞানীরা। সৌর পদার্থ ও চৌম্বক ক্ষেত্রের নমুনা সংগ্রহের পর নাসা মনে করছে এবার শুধু সূর্য নয়,
অন্য নক্ষত্রকে চিনতে বা জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। সেইসঙ্গে সূর্য থেকে সৌর জগতের গ্রহ-উপগ্রহের বিবর্তনের ইতিহাসও তারা জানতে পারবেন। সূর্য কীভাবে তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব কীরূপে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁর জগতে, তারও প্রকাশ ঘটবে নতুন নতুন গবেষণায়। এমনই আশা নাসার বিজ্ঞানীদের।