ব্যুরো রিপোর্ট: সুব্রত মুখোপাধ্যায় শুধু সহযোদ্ধা ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি ছিলেন রাজনৈতিক গুরু। তাঁর হাত ধরেই বাংলার রাজনীতিতে উত্থান মমতার। গুরুর প্রয়াণে ভারাক্রান্ত ভাবশিষ্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই বাতিল করে দিলেন শনিবার ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান।
মমতা জানিয়েছেন, এই অবস্থায় তাঁর পক্ষে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে সামিল হওয়া সম্ভব নয়।প্রতি বছর নিয়ম করে বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারও সেই অনুষ্ঠান হবে, এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে তা শেষপর্যন্ত বাতিল করা হচ্ছে।
সুব্রতদাকে হারিয়ে মমতা ওইদিন আর অন্য ভাইদের নিয়ে আনন্দানুষ্ঠানে মাতবেন না। কারণ সব আনন্দ হরণ করে নিয়ে চলে গিয়েছেন সকলের প্রিয় মানুষটি।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। দীপাবলির রাতে তাঁকে হারিয়ে মমতার তৃণমূল পরিবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছে।
আলোর উৎসবের মাঝেই নেমে এসেছে অন্ধকার। ভারাক্রান্ত মনে তাই শনিবার ভাইফোঁটার উৎসব স্থগিত রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবছর অন্য সকলের সঙ্গে দাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও ফোঁটা দিতেন মমতা। তিনি আর নেই। তাঁর শোকে মু্হ্যমান শুধু মমতা নন, গোটা তৃণমূল পরিবারই তাঁর অভাব বোধ করছে।
তাই শুধু দিদি নন, কেউই অংশ নিতে পারবেন না মমতার বাড়ির ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে।মমতা বলেন, এই প্রথমবার সুব্রত মুখোপাধ্যায় আসবেন না কালীঘাটে বোন মমতার কাছ থেকে ফোঁটা নিতে। মমতার রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন, ছিলেন প্রিয় দাদা।
তাঁকে হারিয়ে কি এত দ্রুত স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব! এত দ্রুত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান হবে না। রীতি মেনে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আচারটি শুধু পালিত হবে।প্রতি বছরই রীতি মেনে মমতার বাড়িতে আসেন দলের সব নেতা-নেত্রীরা।
সবাই দিদি মমতার কাছ থেকে এই বিশেষ দিনে ফোঁটা নেন। বাড়িতে দলের সব নেতাদের আগমনে আশীর্বাদ, প্রণাম আর খাওয়াদাওয়ার পর্ব চলতে থাকে। কিন্তু এ বছর সেসবই স্থগিত।
সুব্রতদাকে হারিয়ে মমতার কালীঘাটের বাড়ি অন্ধকার। সুব্রত বিদায়ে সব উৎসবের রং ফিকে হয়ে গিয়েছে। যেটুকু যা হবে সবাই নিয়ম রক্ষার।সুব্রত মুখোপাধ্যায় কালীপুজোর রাতে বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তাঁরআলো নিভে গিয়ে দীপাবলির রাতেই অন্ধকার নেমে আসে মুখোপাধ্যায় পরিবারে। ভাইফোঁটায় বাড়ি ফেরা হল না সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের, ভাইফোঁটার আগের দিন তাঁর মরদেহ ফিরল বাড়িতে। কালীপুজোর দিন সকাল থেকে হাসপাতালে বেশ ভালোই ছিলেন।
খেতে চেয়েছিলেন নিজের প্রিয় খাবার চপ, মুড়ি, চাউমিন। সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার পর তা দেওয়া হবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না।
গত সোমবার তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়। বসানো হয় দুটি স্টেন্ট। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীলই ছিল তাঁর। তারপরই দুপুরের পর থেকেই ফের ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়। সন্ধ্যায় সব শেষ। এদিন কেওড়াতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য হয়।