মেসি ম্যাজিক, দুরন্ত আলভারেজ! ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্তিনা, দেখুন গোলগুলি

মেসি ম্যাজিক, দুরন্ত আলভারেজ! ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্তিনা, দেখুন গোলগুলি

ব্যুরো রিপোর্ট: কাতারে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল আর্জেন্তিনা। লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে গতবারের রানার-আপ ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। ২০১৪ সালের পর ফের বিশ্বকাপ ফাইনালে লিওনেল মেসিরা। পেনাল্টি থেকে করা মেসির গোলের পর অনেকটা দৌড়ে গিয়ে বিশ্বমানের গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ।

দ্বিতীয়ার্ধে মেসি-আলভারেজ যুগলবন্দিতে ব্যবধান বাড়ে।এই নিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বকাপের ফাইনালে নীল-সাদা ব্রিগেড। এদিনের ম্যাচে কার্ড সমস্যার জেরে গঞ্জালো মন্তিয়েল ও মার্কাস আকুনাকে পায়নি আর্জেন্তিনা। লিওনেল স্কালোনি তাই প্রথম একাদশে রাখেন নিকোলাস তাগলিয়াফিকোকে।

ক্রোয়েশিয়ার শক্তিশালী মাঝমাঠের মোকাবিলায় লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বেঞ্চে রেখে লিয়েন্দ্রো পারেদেসকে শুরু থেকে খেলান হেড কোচ লিওনেল স্কালোনি। ক্রোয়েশিয়া অবশ্য প্রথম একাদশ অপরিবর্তিতই রেখেছিল। প্রথমার্ধে বল দখলে রাখার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকলেও আর্জেন্তিনার পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে করা দুটি গোল বিপাকে ফেলে গতবারের রানার-আপদের।

শুরুর মিনিট কুড়ি অবশ্য নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাস খেলে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছিল ক্রোটরা। তবে গোলমুখ খুলতে পারেনি। খেলা যতই এগোতে থাকে টানা দুটি ম্যাচে ১২০ মিনিট খেলে টাইব্রেকারে জেতা ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলারদের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে থাকে ক্লান্তি।দেরিতে হলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে ভুল করেনি আর্জেন্তিনা।

ক্রোট গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ এনজো ফার্নান্দেজের শট বাঁচান । ৩২ মিনিটে আগের দুটি ম্যাচের নায়ক লিভাকোভিচের ভুলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্তিনা। গোলের দিকে ধাবমান জুলিয়ান আলভারেজের সামনে তিনি যখন একা, তখন অবৈধভাবে বাধা দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন ক্রোট গোলকিপার।

৩৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্তিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। চলতি বিশ্বকাপে এটি তাঁর পঞ্চম গোল। বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ১১টি গোল করার নজির ছিল গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার। সেই নজিরে এবার ভাগ বসালেন মেসি। এলএম টেন এদিন বিশ্বকাপের ২৫তম ম্যাচ খেলে ছুঁয়ে ফেললেন লোথার মাথেউসের বিশ্বরেকর্ড।

ফাইনালে মেসি সেই নজির টপকে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার নজির গড়ে ফেলবেন।৩৯ মিনিটে দর্শনীয় গোল করেন আলভারেজ। মাঝমাঠের আগে থেকে বল ধরে দুরন্ত গতিতে ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ডিফেন্ডারদের বাধা টপকে লিভাকোভিচের নাগাল এড়িয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি।

যা দেখে হাততালি দেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনাল্ডিনহো। এরপর ৪২ মিনিটে আর্জেন্তিনা তৃতীয় গোলটি করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। ম্যাক অ্যালিস্টারের গোলমুখী হেডার অনবদ্য দক্ষতায় রুখে দেন লিভাকোভিচ।

বিরতিতে আ্জেন্তিনা এগিয়ে ছিল ২-০ ব্যবধানে। প্রথমার্ধে ৬২ শতাংশ বলের দখল নিয়েও একটিও গোলে শট নিতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া।দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম গোলটি পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু আর্জেন্তিনার গোলকিপারকে সেভাবে পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি।

৫৮ মিনিটে লিওনেল মেসির গোলমুখী শট রুখে দেন লিভাকোভিচ। ৬৯ মিনিটে আর্জেন্তিনার তৃতীয় তথা ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন আলভারেজ। দুরন্ত ড্রিবলিংয়ে ক্রোট রক্ষণকে নিয়ে ছেলেখেলা করে মেসি মাপা বল বাড়িয়েছিলেন আলভারেজকে লক্ষ্য করে, যা জালে জড়াতে কোনও ভুল করেননি আর্জেন্তিনার এই প্রতিভাবান ফুটবলার।

ইতিমধ্যেই তাঁকে ভবিষ্যতের নক্ষত্র হিসেবে অভিহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। ৭৫ মিনিটে স্কালেনি তুলে নেন আলভারেজকে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পেলে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। সেই নজির এদিন ছুঁতে পারলেন না আলভারেজ পুরো ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ না পাওয়ায়। ফাইনালে আর্জেন্তিনার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স বনাম মরক্কো ম্যাচের জয়ী দল।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *