ইউএস ওপেন থেকে ছিটকে টেনিসকে বিদায় সেরেনার, তবুও কীভাবে অবসর নিয়ে রাখলেন ধোঁয়াশা?

ইউএস ওপেন থেকে ছিটকে টেনিসকে বিদায় সেরেনার, তবুও কীভাবে অবসর নিয়ে রাখলেন ধোঁয়াশা?

ব্যুরো রিপোর্ট:  মহিলা টেনিসের জগতে এক বর্ণময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি। এই মুহূর্তটা আসবে জানাই ছিল। তবে তা যে ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডেই আসবে তা বোঝা যায়নি। অন্তত যে ছন্দে ছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। যদিও তৃতীয় রাউন্ডে সেরেনা দারুণ লড়াই করে হার মানলেন অস্ট্রেলিয়ার আইলা টমলিয়ানোভিচের কাছে।

খেলার ফল ৭-৫, ৬-৭, ৬-১।এরপরই সেরেনাকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন কিনা। ধোঁয়াশা রেখেই সেরেনার উত্তর, আমি মনে করি না তেমন কিছু হবে বলে। যদিও সেটাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। চোখের কোণে জল নিয়েই সেরেনা বলেন, আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এত বছর, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমার পাশে থাকার জন্য।

আমার বাবা-মায়ের জন্যই টেনিসে আসতে পারা। সব কৃতিত্ব তাঁদেরই। তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার চোখ বেয়ে আনন্দাশ্রু ঝরে পড়ছে। সর্বোপরি বলব, ভেনাস না থাকলে সেরেনার পক্ষে সেরেনা হয়ে ওঠা সম্ভব ছিল না। তাই ভেনাসকেও ধন্যবাদ জানাই। তাঁর জন্যই সেরেনা উইলিয়ামসের অস্তিত্ব।

বর্ণময় টেনিস কেরিয়ার প্রসঙ্গে সেরেনা বলেন, এটা একটা মজাদার সফর ছিল। জীবনে আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অসাধারণ এক সফর।সেরেনার বিদায় নিশ্চিত করা টমলিয়ানোভিচ বলেছেন, তিনি আমার জন্য এবং টেনিস জগতের জন্য যা করেছেন তা অসাধারণ। আমি কখনও ভাবিনি সেরেনার শেষ ম্যাচে আমি তাঁর প্রতিপক্ষ হবো।

যখন ছোট ছিলাম তখন থেকে সেরেনাকে বিভিন্ন ফাইনালে দেখে টেনিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। ফলে এই মুহূর্তটা আমার কাছে পরাবাস্তব। সেরেনার থেকে যেটা শিক্ষণীয় তা হলো, জীবনে কোনও স্বপ্নই বিরাট কিছু নয়। কে কোথা থেকে এসেছেন, কোন পরিস্থিতি থেকে এসেছেন সেটা বড় নয়। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখলে সব কিছুই করা সম্ভব।

টমলিয়ানোভিচের কথায়, শেষ পয়েন্ট নিশ্চিত হওয়ার আগে বারবার মনে হয়েছে সেরেনার কাছে বুঝি হেরে যাব। এমনকী তিনি ১-৫ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার সময়ও। সেরেনা এ কারণেই সর্বকালের সেরা।সেরেনা পেশাদার টেনিসে নিজের ম্যাচেও দারুণ ঝলক উপহার দিলেন। প্রথম সেটে প্রথমে প্রতিপক্ষের সার্ভ ব্রেক করার পর ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়েও যান।

যদিও শেষ ১৯টির মধ্যে ১৫টি ম্যাচ জিতে এই ম্যাচ খেলতে নামা উইম্বলডনে দুবারের কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলীয় প্রথম সেটটি জিতে নেন টানা চারটি গেম জিতে। দ্বিতীয় সেটটি জিতে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ান সেরেনা। তবে এখানেও পিছিয়ে থাকা টমলিয়ানোভিচ একটা সময় ৫-৫ করে ফেলেছিলেন।

সেরেনা-সেরেনা ধ্বনিতে মুখরিত স্টেডিয়ামে টাইব্রেক জিতে সমতা ফেরাতে সক্ষম হন উইলিয়ামস। তিন ঘণ্টা চার মিনিট ধরে চলা থ্রিলার অবশ্য শেষে জেতেন টমলিয়ানোভিচই, যা তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ হয়ে রইল। প্রতিপক্ষের সার্ভ ব্রেক করে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে চান। কখনোই আর পিছিয়ে থাকতে হয়নি।

১৯৯৮ সালে ইউএস ওপেনে অভিষেকের বছরেও তৃতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। শেষবারও বিদায় নিলেন সেই তৃতীয় রাউন্ড থেকে। সেরেনা অস্ট্রেলিয়ান ওপেন সিঙ্গলসে ৯২টি ম্যাচ জিতেছেন, চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ২০০৩, ২০০৫, ২০০৭, ২০০৯, ২০১০, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে।

ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হন ২০০২, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে, ম্যাচ জিতেছেন ৬৯টি। উইম্বলডন খেতাব জয় ২০০২, ২০০৩, ২০০৯, ২০১০, ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে, ম্যাচ জিতেছেন ৯৮টি। ইউএস ওপেনে জিতেছেন ১০৮টি ম্যাচ, সিঙ্গলস খেতাব জয় ১৯৯৯, ২০০২, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *