ব্যুরো রিপোর্ট: করোনা বিধি মেনে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের দাবি মেনে শর্তসাপেক্ষে মেলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে।
করোনা বিধি মেনে যাতে গঙ্গাসাগর মেলা হয়, তার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তিন সদস্যের কমিটির মাথায় থাকবেন মুখ্যসচিব।কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শুক্রবার সওয়াল-জবাব শেষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিলেন শর্তসাপেক্ষে।
তিনি সাফ জানালেন, করোনা বিধি মেনে এই মেলার আয়োজন করতে হবে। কোথাও কোনও ফাঁক রাখা চলবে না। এ জন্য প্রধান বিচারপতির ডিভিশম বেঞ্চ একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেন।
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, তিন সদস্যের কমিটির মাথায় থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। থাকবেন বিরোধী দলনেতা বা তাঁর পক্ষের কোনও প্রতিনিধি এবং থাকবেন মানবাধিকার কমিশনের কোনও প্রতিনিধি।
এই কমিটির প্রধান কাজ হবে গঙ্গাসাগর মেলায় করোনা বিধি সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কি না, তার দিকে নজরে রাখা।এদিনই করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার জন্য জোর সওয়াল করে বিজেপির।
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে সরকার দ্বিচারিতা করছে। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আগামী সাতদিন ভয়ঙ্কর। কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। আবার বলছেন গঙ্গাসাগরে ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে।
তারপর ১০ হাজার পুলিশ এবং পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে মোট ৪৫ হাজারের সমাগম হয়েছে।রাজ্য দাবি করছে, গঙ্গাসাগরে করোনাবিধি মেনে মেলার প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। কিন্তু বিজেপির তরফে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরে স্বাস্থ্য পরিষেবা খুবই উদ্বেগের।
মাত্র ১১ জন চিকিৎসক রয়েছেন গঙ্গাসাগর সন্নিহিত হাসপাতালে। মাত্র ৬০ বেডের হাসপাতাল। এই বিপুল সমাগমের জন্য যদি করোনা ছড়ায়, তবে তা সামলানোর পরিকাঠামো নেই।
কিন্তু জনৈক চিকিৎসকের করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে রাজ্যের দাবিকেই শর্তসাপেক্ষে মান্যতা দিল হাইকোর্ট। ধর্মীয় ভাবাবেগের কারণেই করোনা বিধি মেনে হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। কিন্তু উদ্বেগ রয়েই যাচ্ছে।
করোনার যে ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্যের বুকে তাতে গঙ্গাসাগর মেলা আরও বাড়িয়ে দিতে সংক্রমণ প্রবণতা। এ থেকে বাঁচার একটাই উপায়, সতর্কতা। তাই হাইকোর্ট নির্ধারিত কমিটির কাছে এখন গুরুদায়িত্ব রাজ্যকে রক্ষা করার, রাজ্যের মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর।