ব্যুরো রিপোর্ট: দুটি মাত্র গাছে কয়েকটি আম ঝুলছে, আর সেগুলিই পাহারা দেওয়ার জন্য চারজন সিকিউরিটি গার্ড ও ৬টি জার্মান শেফার্ড কুকুর মোতায়েন করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের এক আমবাগানে কিন্তু দিব্যি রয়েছে এই ব্যবস্থা। এই এলাহি সুরক্ষার অবশ্য বিশেষ কারণও রয়েছে।
এই আম যে আর পাঁচটা হিমসাগর, মল্লিকা, ল্যাংড়া, বেগমপসন্দ, গোলাপখাসের মতো নয়। এটি বিশ্বের অন্যতম বিরল প্রজাতির আম। এর নাম ‘মিয়াজাকি’। এই আমের এক-একটির দাম শুনলেই চমকে যেতে হয়। আর কেজি-দরে তো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আন্তর্জাতিক বাজারে মিয়াজাকি আম ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়! এই মিয়াজাকি আমের উত্পত্তি জাপানে। লাল বর্ণের খোসা ও ভিতরে উজ্জ্বল হলুদ শাঁসের জন্য এটিকে জাপানে ‘সূর্যের ডিম’ বলা হয়। জাপানে একটি মিয়াজাকি আমের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার টাকারও বেশি হতে পারে।
জানা গেছে, বিশেষ তাপমাত্রা, নির্দিষ্ট পরিমাণে জল, পরিমিত সার-সহ একাধিক জিনিসের সমন্বয়ে মিয়াজাকি আম চাষ করতে হয়। জাপানের মিয়াজাকি নামের একটি জায়গাতেই এই আমের চাষ শুরু হয় ১৯৭০ দশকে।
তার পরেই এর জনপ্রিয়তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই আম চাষে যেমন আকাশছোঁয়া লাভ, তেমনি এর লোকসানও অনেক। তাই গাছে আম ধরার পর থেকেই নানারকম সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। জব্বলপুরের আমবাগানেও তাই নিরাপত্তাকর্মী, রক্ষী কুকুর রাখা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, যে কোনও মিয়াজাকি আমের বাগানেই আম যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্যও ব্যবস্থা করা হয়। আমের বোঁটার সঙ্গে গাছের মূল ডাল একটি সরু, শক্ত নাইলনের দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। এর ফলে আম সহজে খসে পড়বে না।
প্রতিটি আম প্লাস্টিকের প্যাকেটে বা নেটে মুড়েও দেওয়া হয়, যাতে গায়ে একটুও দাগ না লাগে। শুধু মানুষের হাত থেকে বাঁচানো নয়, পাখি, হনুমানে যাতে আম না ঠোকরায়, তার জন্যও সর্বক্ষণ রাখতে হয় কড়া নজরদারি।
এই আমের চারা পাওয়াও মোটেই সহজ নয়। জাপানে মিয়াজাকি নামেই একটি সংস্থা রয়েছে। তারা এই আমের চারা বিক্রি করে। অনেকে বলেন, আফগানিস্তানের নূরজাহান আমের পরেই নাকি এই আমের স্বাদ, মত অনেকের।