ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাঁদা তুলে গোটা একটা দ্বীপ কিনে ফেললেন দুই বন্ধু!

ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাঁদা তুলে গোটা একটা দ্বীপ কিনে ফেললেন দুই বন্ধু!

ব্যুরো রিপোর্ট:  ক্যারিবিয়ানের দ্বীপপুঞ্জের অজস্র দ্বীপের মধ্যে একটি কফি কায়ে দ্বীপ । আপাতত সেই দ্বীপের মালিক গ্যারেথ জনসন এবং মার্শাল মায়ের নামে দুই বন্ধু। গ্যারেথ এবং মার্শালই আপাতত ওই দ্বীপের রাজা। আবার তাঁরাই প্রজাও।

কারণ কফি কায়ে একটি জনবসতিহীন দ্বীপ। তবে মানুষ না থাকলেও এই দ্বীপের নিজস্ব সরকার আছে। আছে জাতীয় পতাকা এমনকি, প্রতীকও।যদিও কফি কায়ে এখনও পূর্ণ রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়নি। পেলেও এই দ্বীপদেশ মাইক্রোনেশন বা ক্ষুদ্রতম দেশের মর্যাদা পেতে পারে।

গ্যারেথ ও মার্শাল জানিয়েছেন আগামী দিনে এই অভাবপূরণেরই পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। দু’জনই চান, কফি কায়েকে তাঁদের নিজস্ব দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে।নির্জন দ্বীপের মালিক হওয়ার সুপ্ত বাসনা বোধহয় অল্প বিস্তর অনেকেরই মনে থাকে।

তবে একটা গোটা দ্বীপ কিনে নেওয়ার সামর্থ্য এত দিন একচেটিয়া দেখিয়ে এসেছেন ধনকুবেররাই। গ্যারেথ আর মার্শাল অবশ্য দেখিয়ে দিয়েছেন দ্বীপ কিনতে সামর্থ্য নয়, উপযুক্ত পরিকল্পনা আর বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তই যথেষ্ট।২০১৮ সালে দু’জনে দ্বীপ কেনার জন্য খেলাচ্ছলেই অনলাইনে চাঁদা তোলার কাজ শুরু করেছিলেন।

তবে তাঁদর ইচ্ছের কথা গোপন রাখেননি। চাঁদা তোলার লিঙ্কেই লেখা ছিল গোটা বিষয়টা।আসুন একটি দ্বীপ কিনে ফেলা যাক’— এই শিরোনামে দ্বীপ কিনতে নামেন দুই বন্ধু। দেখা যায়, কিছু দিনের মধ্যেই সেই আবেদনে সাড়া দিতে শুরু করেছেন মানুষ।

এক বছরের মধ্যেই চাঁদার অর্থ আড়াই লক্ষ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়। যা ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় দু’কোটি টাকার সমান। সেই টাকা দিয়েই দ্বীপটি কিনে ফেলেন গ্যারেথ এবং মার্শাল।কফি কায়েই সম্ভবত প্রথম দ্বীপরাষ্ট্র যা চাঁদা তুলে কেনা হয়েছে।

এমনকি, চাঁদা দিয়ে কেনা এই দেশটিতে ভ্রমণের তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে।কফি কায়েতে প্রথম বার বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পাবে ১৩টি সংস্থা যারা মার্শালদের ওই দ্বীপ কিনতে চাঁদা দিয়েছে। ভ্রমণের দায়িত্বে থাকছেন মার্শাল নিজেই।

তবে তিনি জানিয়েছেন, দ্বীপটি এতই ছোট যে তার একপ্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায় কয়েক মিনিটেই। ফলে ভ্রমণে বিশেষ সময় লাগার কথা নয়।একইসঙ্গে মার্শালের মত, দ্বীপটি ছোট হতে পারে তবে নিজের কেনা দ্বীপে পা রাখার আনন্দই আলাদা।

কফি কায়ে আকারে ছোট হলেও এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নাকি দেখার মতো। তাই আগামী দিনে কফি কায়েকে পর্যটন ক্ষেত্র বানানোর কথাও ভাবছেন গ্যারেথ আর মার্শাল। তবে সবার আগে দ্বীপটিকে দেশ বানাতে চান তাঁরা।

চাঁদা তুলে যে একটা দেশ বা দ্বীপ কেনা যায়, সেই ভাবনাটি অবশ্য গ্যারেথের। কফি কায়ের প্রশাসনিক দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন গ্যারেথ। তবে কফি কায়ে দেশ হলেও এ দেশের নিজস্ব কোনো সেনাবাহিনী নেই।

জলে ঘেরা দেশটিতে নেই কোনও নৌবাহিনীও।বলতে গলে সমূদ্রের মাঝামাঝি এখনও একরকম অরক্ষিতই দেশটি। তবে ইতিমধ্যেই প্রিন্সিপালিটি অফ আইল্যান্ডিয়া নামে নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠাও করে ফেলেছে কফি কায়ে।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *