ব্যুরো রিপোর্ট: জায়গার উপনির্বাচন। বহু জায়গার ফলাফলে দেখা গিয়েছে বিজেপি নিজের পোক্ত জমি হারিয়েছে। বাংলায় ২টি আসন যেমন খুইয়েছে জেপি নাড্ডাদের দল,তেমনই কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশে একাধিক কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরের জোরদার আসন খুইয়েছে বিজেপি।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে সারা দেশে উপনির্বাচনের ফলাফলে হাওয়া বুঝেই উত্তরপ্রদেশের হাইভোল্টেড বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই পিচ প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। আর তার হাত ধরেই একাধিক পদক্ষেপ উঠে এসেছে বলে দেখা যাচ্ছে।কথায় বলে, উত্তরপ্রদেশ যার দখলে তার সংসদ দখলে সময় লাগে না!
গোবলয় রাজনীতিতে এই উত্তরপ্রদেশকে দখলে রাখা সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির কার্যত পাখির চোখ। সেই জায়গা থেকে যোগী রাজ্যে রাশ ধরে রাখতে কার্যত মরিয়া পদক্ষেপ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। দাবি বহু বিশ্লেষকের। সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে বিজেপি নিজের পোক্ত বহু ঘাঁটি খুইয়েছে।
যা ভালোভাবে নেয়নি দিল্লির হাইকমান্ড। প্রশ্ন উঠতে, তাহলে কি সেই হারানো মাটি ফিরে পেতেই পেট্রোল, ডিজেলের দামে কমতি থেকে শুরু করে, রেশনের মেয়দা বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্র?কেন্দ্র যখন জানান দিয়েছে জ্বালানির দামে কাটছাঁটের কথা, তখন অসম,
ত্রিপুরা সহ দশ রাজ্যে বিজেপি শাসিত সরকার শুল্কের ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা যে উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে ভোটের আগে বড় বার্তা তা বহু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই মেনে নিচ্ছেন। তবে দেখা যায়, দিওয়ালির মরশুমে অযোধ্যায় দাঁড়িয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেন,
তাঁর সরকার কেন্দ্রের রেশনের প্রকল্পের মেয়াদ আরও এগিয়ে তা হোলি পর্যন্ত নিয়ে যেতে চায়। যে ঘোষণা কার্যত গোবলয়ের রাজনীতিতে জ্বালানির দামের কমতির ঘোষণাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, বিজেপি সম্পূর্ণ রূপে স্ট্র্যাটেজি ধরে এমন ঘোষণা পর পর করছে।
আর তার কেন্দ্রে রয়েছে আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন।কার্যত শেষবারের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন অমিত শাহকে ‘চাণক্য’এর তকমা এনে দিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে আসন্ন নির্বাচন তাঁর রাজনৈতিক জীবনে যে আরও বড় চ্যালেঞ্জ তা বলাই বাহুল্য।
একদিকে উত্তরপ্রদেশ সরকার রেশন প্রকল্পকে মার্চে হোলি পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে বড় দান রেখেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এদিকে, পর পর প্রকল্পের ঘোষণার মাঝে গত সপ্তাহে অমিত শাহ লখনউতে এসেই বিজেপির সদস্য সংখ্যা বাড়াতে যোগদানের প্রচার শুরু করেন। বিজেপি সূত্রেরর খবর,
এই প্রচার যদিও ২০২২ নয় , বরং ২০২৪ কে নজরে রেখে শুরু করেছেন অমিত শাহ। কারণ, উত্তরপ্রদেশেই রয়েছে বারাণসীর মতো হাইভোল্টেজ আসন, যেখানের সাংসদ নরেন্দ্র মোদী২০২২ সালের নির্বাচনই কার্যত ২০২৪ সালের রোডম্যাপ বিজেপিকে দিয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সেই জায়গা থেকে বিজেপি নেতা অমিত শাহ নিজেও জানিয়েছেন ,যে ২০২৪ জেতার জন্য ২০২২ জিতে নেওয়া খুবই জরুরি। উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জোরদার কৃষকদের বিক্ষোভ,
জ্বালানির দামে হু হু করে বৃদ্ধি, এমন বেশ কয়েকটি বিষয় খুব বিজেপির পক্ষে নেগেটিভ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই জায়গা থেকে পরিস্থিতি মসৃণ করতে আপাতত ব্যস্ত অমিত শাহরা।