দেশকে ভোর থেকেই টিভির সামনে আটকে রাখা কে এই অদিতি অশোক?

দেশকে ভোর থেকেই টিভির সামনে আটকে রাখা কে এই অদিতি অশোক?

ব্যুরো রিপোর্ট: টোকিও অলিম্পিক থেকে পদক আনতে ব্যর্থ ভারতের পুরুষ গল্ফার অনির্বাণ লাহিড়ি ও উদয়ন মানে। সেই শূন্যতা পূরণ করে ঐতিহাসিক পদক জয়ের দেশের মহিলা গল্ফার অদিতি অশোক। তাঁর জন্য গলা ফাটাতে ভোর থেকেই টিভির সামনে বসে গিয়েছেন ভারতীয় ক্রীড়া প্রেমীরা।

কার্যত আগ্রহহীন গল্ফ এবার আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কিছু না বুঝেও অদিতির হয়ে গলা ফাটিয়েছেন নেটিজেনরা। যাঁর জন্য এতকিছু, তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

সারা বছর যে গল্ফের খোঁজও রাখা সম্ভব হয় না, সেই খেলাই আচমকা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টোকিও অলিম্পিকের প্রেক্ষাপটে। ইভেন্ট থেকে ভারতকে পদক জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দেওয়া গল্ফার অদিতি অশোকের প্রতিটি শটই আগ্রহ নিয়ে দেখতে ভোর থেকেই টিভির সামনে বসে গিয়েছে কার্যত গোটা দেশ।

কোন শটের জন্য কত পয়েন্ট, মোট কত হোলের খেলা, সে সম্পর্কে ধারণা না রেখেই অদিতির জয় দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। দেশের মহিলা গল্ফারের জয় আশা করেছেন নেটিজেনরা।

৫ বছর আগে রিও অলিম্পিকেও ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন গল্ফার অদিতি অশোক। নিঃশব্দেই ওই প্রতিযোগিতা থেকে বিদায়ও নিয়েছিলেন ২৩ বছরের ভারতীয় গল্ফার। ভাল শুরু করেও মাঝের দুই রাউন্ডের খারাপ স্কোরের জন্য ৪১তম স্থানে ওই প্রতিযোগিতা শেষ করা অদিতি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, রিও গেমস ছিল তাঁর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার মঞ্চ।

টোকিও অলিম্পিকে ভারতকে পদক নিশ্চিত করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল বলেও জানিয়েছিলেন অশোক। যিনি টোকিও গেমসে নিজের সাড়া জাগানো পারফরম্যান্সের কৃতিত্ব নিজের অভিভাবকদের দিয়েছেন। মা মাহেশ্বরীর ক্যাডি হিসেবে পাশে থাকা এবার ভারতীয় গল্ফারের সবচেয়ে বড় শক্তি বলা চলে।

অশোক ও মাহেশ্বরী গুদলুমানির কন্যা অদিতি অশোকের জন্ম বেঙ্গালুরুতে। ২০১৬ সালে দ্য ফ্র্যাঙ্ক অ্যান্টোনি পাবলিক স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা ২৩ বছরের তরুণীর গল্ফে হাতেখড়ি হয়েছিল ৫ বছর বয়সে। অদিতিকে কর্নাটকের গল্ফ অ্যাসোসিয়েশন ড্রাইভিং রেঞ্জে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা।

২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে অদিতির ক্যাডি ছিলেন বাবা অশোকই। ভারতের প্রথম এবং কনিষ্ঠতম গল্ফার হিসেবে লালা আইচা ট্যুর স্কুল চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২০১৬ মরসুমের মহিলা ইউরোপীয়ান ট্যুরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন অদিতি। একই সঙ্গে কনিষ্টতম হিসেবে আন্তর্জাতিক ট্যুরের কিউ স্কুলের খেতাব জেতার নজির গড়েছিলেন ভারতীয় অলিম্পিয়ান।

২০১৬ সালের হিরো ওমেনস ইন্ডিয়ান ওপেন জেতা অদিতি কাতার লেডিস ওপেন ও এলপিজিএ ফাইনাল কোয়ালিফায়িং টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন। ২০১৭ সালের এলপিজিএ ট্যুর অংশ নেওয়া ভারতের প্রথম গল্ফারের স্বীকৃতি পান বেঙ্গালুরুর তরুণী।

২০১৯ মরসুমের এলপিজিএ ট্যুরের অন্তর্গত সিপি ওমেনস ওপেনে ২২-এর মধ্যে ১৩ কাট হাসিল করে ১৩ নম্বর টাইতে স্থান পেয়েছিলেন অদিতি। মহিলাদের ইউরোপীয়ান ট্যুরে পরপর দুই মরসুমে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হন ভারতীয় গল্ফার। এখনও পর্যন্ত তিনটি লেডিস ইউরোপীয়ান ট্যুরের টুর্নামেন্ট সহ মোট পাঁচটি জয় রয়েছে অদিতির ঝুলিতে

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *