নিজের কার্যকাল শেষ করতে না পারলেও দারুণ একটা ইতিহাস গড়লেন ইমরান!

নিজের কার্যকাল শেষ করতে না পারলেও দারুণ একটা ইতিহাস গড়লেন ইমরান!

ব্যুরো রিপোর্ট:  শেষ রক্ষা হল না! দিনভর চূড়ান্ত নাটকের পর আস্থা ভোটে হারলেন ইমরান খান। নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু শনিবার মধ্যরাতে প্রত্যাশামতোই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ভোটাভুটিতে হেরে পাকাপাকিভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হল তেহরিক ই ইনসাফ পাকিস্তানের প্রধান ইমরান খানকে।

এদিন সরকারের বিপক্ষে ১৭৪টি ভোট পড়েছে। তবে মুখ থুবড়ে পড়লেও লড়াই জারি রাখার বার্তা দিয়েছেন প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রী।তবে বিরোধীদের অনাস্থা ঠেকাতে সবরকম ভাবে চেষ্টা চালিয়েছিলেন ইমরান খান। গত ৩ এপ্রিল আস্থা ভোটের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে খেলা ঘুরিয়ে দেন তিনি।

রাতারাতি সে দেশের জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে করেন। এবং নতুন ভাবে ভোটের জন্যে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেন ইমরান। কিন্তু পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আস্থা ভোটের মুখোমুখি শেষ পর্যন্ত হতেই হয় ইমরান খানকে।ইমরান খানের বিরুদ্ধে হওয়া আস্থা ভোটে বিরোধীদের পক্ষেই একাধিক ভোট পড়ে।

ছিটকে যান ইমরান। বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শারিফ বলেন, আমরা কোনও বদলা নেব না। এমনকি কাউকে জেলেও পাঠানো হবে না। কিন্তু আইন অবশ্যই তাঁর কাজ করবে। তবে সম্পূর্ণ ভাবে স্পষ্ট আগামী ১১ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে একটি বৈঠক হবে। আর সেখানেও শাহবাজ শরিফকে আগামিদিনের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

আজ রবিবার ২টোর সময়েও হতে পারে বৈঠক।শাহবাজ শরিফ দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই। বলে রাখা প্রয়োজন, গত ৩ এপ্রিল সংযুক্ত বিরোধীরা আগামি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাহবাজকে ইতিমধ্যেই বেছে নিয়েছেন।

ইমরান খান পাকিস্তানের ইতিহাসের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসে কুর্সি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। পাকিস্তান সরকারের প্রধানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে গেলে একমাত্র সাংবিধানিক নিয়ম অনাস্থা প্রস্তাব আনা। আর তা এনেই সরানো হল ইমরানকে। আর সেটাই নয়া রেকর্ড।৭৫ সালের ইতিহাসে কোনও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পাঁচ বছরের কার্যকাল সম্পূর্ণ করতে পারেনি।

শুধু মাত্র তিনজন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি( ২০০৮ থেকে ২০১২), নওয়াজ শরিফ ( ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭) এবং ইমরান খান (২০১৮ থেকে ২০২২) চার বছর পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের দায়িত্বে ছিলেন। পাকিস্তানের ইতিহাসে মাত্র দুবারই সংসদই তাঁর কার্যকাল সম্পন্ন করতে পেরেছে। বেশির ভাগ সরকারই পড়ে গিয়েছে। (১১ বছর) এবং জেনারেল পারভেজ মুসারফ (৯ বছর) এমন দুই সৈন্য শাসক ছলেন,

যারা পাকিস্তান সরকারের প্রধান হিসাবে সবথেকে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন।জানা যায় রাতেই পাক প্রধানমন্ত্রীর জন্যে বরাদ্দ বাড়ি ছেড়ে দেন ইমরান। এমনকি ইসলামাবাদ ছেড়েও চলে গিয়েছেন বলে খবর। অন্যদিকে রাতেই ইমরান ঘনিষ্ঠ অফিসারদের বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ইমরান সরকারের পতনের পরেই ইস্তফা দিয়েছেন অ্যাটোর্নি জেনারেল। এখন দেখার অবস্থা কোনও দিকে ঘোরে?

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *