ব্যুরো রিপোর্ট: অবশেষে স্বপ্ন পূরণ। প্রকল্প ঘোষণার ১২ বছরের মাথায় বাংলাদেশে চালু হল ‘পদ্মা সেতু’। দোতালা সেতু তৈরি করা হয়েছে। যার উপরের চার লেন দিয়ে ছুটবে গাড়ি। নীচে দৌড়বে ট্রেন। এর ফলে রেলপথে কলকাতা থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় অনেক কমে যাবে। মাত্র ছয় ঘন্টায় এই দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে।
সেতু উদ্বোধন করার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অনুযোগ নেই। আমরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা করে যাচ্ছি।’
এর সঙ্গে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার লাইনও শোনান তিনি। হাসিনা বলেন, ‘জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না।জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি।’
২০১০ সালে পদ্মার উপর দোতলা সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ সরকার। প্রথমে সব ঠিকঠাক চললেও, পরে বিশ্বব্যাঙ্ক এই প্রকল্পের উপর থেকে হাত তুলে নেই। কিন্তু তা সত্বেও হেরে যায়নি বাংলাদেশের সরকার। সেই সময় হাসিনা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ নিজের টাকা দিয়েই সেতু তৈরি করবে। তার পর অবশেষে তৈরি হল পদ্মা সেতু।
এই সেতু তৈরি করতে খরচ পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। অবশ্য কিছু মাস আগে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছিল পদ্মা সেতু তৈরি করতে তাদের ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ৫৪৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। মজবুত পাইল ইস্পাত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই সেতুর পিলার।
সেতুতে রয়েছে ৪০টি স্তম্ভ। স্প্যান সংখ্যা রয়েছে ৪১টি। যা পদ্মার ১২২ গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই সেতু এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এই সেতু ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সইতে পারবে। কলকাতা থেকে ঢাকার দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। যা আগে অতিক্রম করতে লাগতো ১০ ঘন্টা।
এর মধ্যে আবার জলের উপর দিয়ে স্টিমারে করে যেতে হত। সড়ক পথে এখন কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে আরও কম সময় লাগবে। রেলপথেও সময় অনেকটা কমে যাবে। সেতুর উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে শুক্রবার রাত থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেছিল সাধারণ মানুষ। সবার মুখেই একটা আলাদা খুসি লক্ষ্য করা গিয়েছে।