ব্যুরো রিপোর্ট: ভয়াল রূপ থাকলেও সমুদ্রেই গতি হারাচ্ছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি । সোমবারেও যেখানে এর সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘন্টায় ২৫ কিমি, তা এদিন ভোর রাতে ছিল ঘন্টায় ৭ কিমি। আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণ আগামী ২৪ ঘন্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আরও গতি হারিয়ে ফের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
তবে এর প্রভাবে উপকূলবর্তী অঞ্চলে বৃষ্টি চলবে।এদিন সকালে আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি পশ্চিম মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে এর বেগ কমেছে।
রাত আড়াটে নাগাদ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আগের ছয় ঘন্টার হিসেবে প্রতিঘন্টায় এর বেগ ছিল ৭ কিমি। সেই সময় এর অবস্থান ছিল অন্ধ্রপ্রদেশে কাঁকিনাড়া থেকে ৩৩০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে এবং ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৫১০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পুরী থেকে ৫৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে।
আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১০ মে অর্থাৎ এদিন রাত পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলের কাছে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের কাছে পৌঁছে যাবে।আবহাওয়া দফতর মনে করছে, এদিনই এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেবে এবং তা উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশার উপকূল বরাবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে যাবে।
এর পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় ক্রমেই শক্তি হারিয়ে ফের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।ঘূর্ণিঝড়ের বেগ কমলেও পশ্চিমবঙ্গের জন্য আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা জারি রয়েছে। জানানো হয়েছে, ১০-১৩ মের মধ্যে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় ১০ থেকে ১২ মের মধ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের বলা হয়েছে এদিন থেকে আপাতত সমুদ্রে না যেতে। পাশাপাশি ১০-১৩ মে-র মধ্যে সমুদ্র উপকূলে কোনও রকমের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালিতে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে দূর থেকে সমুদ্র দেখতে কোনও অসুবিধা নেই। গোসাবার মতো জায়গায় চলছে মাইকে করে প্রচার। উপকূলে বাঁধের ওপরে নজরদারি চলছে। প্রয়োজন পড়লে উপকূলে বসবাসকারী মানুষজন সরানোর প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে প্রশাসন।