অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ফের সবার সেরা ভারত, এই নিয়ে পঞ্চমবার খেতাব জয় টিম ইন্ডিয়ার

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ফের সবার সেরা ভারত, এই নিয়ে পঞ্চমবার খেতাব জয় টিম ইন্ডিয়ার

ব্যুরো রিপোর্ট:  রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল ভারতীয় দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত ২০২২ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের ফলে এই নিয়ে পঞ্চমবার এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হল ভারত।

অ্যান্টিগুয়ার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ছয় উইকেটে পরাজিত করল যশ ঢুলের নেতৃত্বাধীন অনূর্ধ্ব-১৯ টিম ইন্ডিয়া। ফাইনাল ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের নায়ক রাজ বাওয়া।প্রথমে ব্যাট করে ভারতের সামনে ১৯০ রানের টার্গেট রাখে ইংল্যান্ড।

দু’শোর ও কম লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে খুব বেশি সমস্যা হয়নি অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের। ৬ উইকেট হারিয় এবং ২.২ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া।শুরুটা যদিও প্রত্যাশা মতো হয়নি ভারতীয় ইনিংসের।

দ্বিতীয় বলেই ওপেনার অঙ্গকৃষ রঘুবংশী ০ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, অপর ওপেনার হার্নুর সিং করেন ২১ রান। দুই ওপেনার তাড়াতাড়ি প্যাভিলিয়নে ফিরলেও তার কোনও প্রভাব দলের উপর পড়তে দেননি শেখ রশিদ, নিশান্ত সিন্ধুরা।

শেষ চারের ফর্ম বজায় রেখে ফাইনালেও ভাল ছন্দে পাওয়া গিয়েছে রশিদকে। এ দিন গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চাশ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। রশিদ ছাড়াও বড় রান পেয়েছেন নিশান্ত সিন্ধু। তাঁর ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫০ রানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।

বল হাতে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও নিজের দক্ষতার ছাপ রেখেছেন রাজ বাওয়া (৩৫)। মূলত নিশান্ত এবং রাজের কারণে আকস্মিক তৈরি হওয়া বিপদ থেকে এই ম্যাচে বেরিয়ে আসতে পেরেছিল ভারত।

জেমস সেলসের ওভারে পর পর দুই সেট ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ভারতীয় দলকে ম্যাচে ফেরায় রাজ এবং নিশান্তের জুটি। ইংল্যান্ডের হয়ে দু’টি করে উইকেট পেয়েছেন জসুয়া বয়ডেন, জেমস সেলস এবং থমাস আসপিনওয়াল।

শনিবার বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে বিশ্ব খেতাব জয়ের লক্ষ্যে প্রথমে টসে জিতে অ্যাডভান্টেজ পেয়েছিল ইংল্যান্ড কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক উইকেটের সুবিধা নিতে পারেনি তরুণ ইংরেজদের নিয়ে তৈরি দলটি।

একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যান জো রুট-জিমি অ্যান্ডারসনদের উত্তসূরিরা। এ দিন মূলত ভারতীয় পেস বোলিংয়ের সামনে রুখে দাঁড়াতে পারেননি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। শোচনীয় আত্ম সমর্পণ করতে হয় ভারতীয় পেস ব্যাটারির সামনে।

রবি এবং রাজের যুগলবন্দীর সামনে ইংল্যান্ডের জেমস রিউ ছাড়া কোনও ক্রিকেটারই টিকতে পারেননি। ৪৪.৫ ওভারে ১৮৯ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। তবে, এই ইনিংস আরও আগেই গুটিয়ে ফেলতে পারত ভারত।

একটা সময়ে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ভেন্টিলেশনে চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে পাঁচটি উইকেট সংগ্রহ করেন হিমাচল প্রদেশের রাজ বাওয়া।শুধু রাজ একাই নন, ভারতকে পঞ্চমবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের দিকে এগিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন বাংলার রবি কুমার।

চারটি উইকেট নিয়েছেন রবি। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে ধসের সূচনা হয়েছিল রবির মধ্যে দিয়েই। অবশিষ্ট একটি উইকেট নিয়েছেন কুশল তাম্বে।একটা সময়ে ইংল্যান্ডের রান দাঁড়িয়েছিল ৯৭/৭। পঞ্চাশ রান তুলতেই অর্ধেক ব্যাটিং লাইন প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের।

এই অবস্থায় অতি বড় ইংরেজও হয়তো মনে করেননি দল ১৫০ রানের গণ্ডি টপকাতে পারবে। কিন্তু এই অবস্থাতেও ইংল্যান্ডের ইনিংস সম্মানজনক পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছে এক মাত্র জেমসের কারণে। মাত্র পাঁচ রানের জন্য শতরান মিস করলেও জেমস রিউ ৯৫ রানের যে ইনিংস খেলেছে তাকে কুর্ণিশ জানাতে বাধ্য গোটা ইংল্যান্ড।

জেমস রিউ ছাড়া ইংল্যান্ডের ইনিংসকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন জেমস সেলস। লোয়ার অর্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সেলস। এই দুই জেমসের কারণেই ভারতের সামনে ১৯০ রানের টার্গেটও রাখতে পারত না ইংল্যান্ড।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ জয়ের ফলে পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে এই খেতাব জিতলেন যশ ঢুল। এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন মহম্মদ কইফ (২০০০), বিরাট কোহলি (২০০৮), উন্মুক্ত চাঁদ (২০১২) এবং পৃথ্বী শ (২০১৮)।

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *